রাজশাহীতে আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা-অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধের ঘোষণা

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের(বিএমডিসি)অনুমোদন না পাওয়ায় রাজশাহীর বেসরকারী শাহমখদুম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে আবারো আন্দোলন শুরু করেছে।শনিবার সকাল ১১টার সময় থেকে কলেজ প্রশাসন ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এর আগ গত ৮ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করে এবং কলেজ কর্তৃপক্ষকে তিন দিনের আল্টিমেটাম দেয়। কলেজ কর্তৃপক্ষকে দেয়া তিন দিনের আল্টিমেটামের শেষ দিনে কনো সুরাহ না হওয়ায় ফের তারা আন্দোলন শুরু করেন। এবং দাবি না মানা পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে সরে আসবেনা। এসময় তারা ১৭ দফা দাবি সংবলিত ব্যানার ফেস্টুন ও প্লেকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করেন। ফলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অচল হয়ে পড়েছে শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে ছাত্রদের রাত ৮টা এবং ছাত্রীদের রবিবার সকাল ১০টার মধ্যে কলেজ হোস্টেল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিকেলে একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, এই কলেজের প্রথম ব্যাচে ভর্তি হয়েছিল ১৮জন। কিন্তু নীতিগত অনুমোদন ও প্রয়োজনীয় শিক্ষক এবং প্র্যাক্টিক্যাল সরঞ্জাম না থাকায় ১৪চন শিক্ষার্থীই শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ ছেড়ে চলে যায়।এরপরও যারা এমবিবিএস কোর্স শেষ করেছেন তারাই পড়েছেন বিপদে। বিএমডিসির অনুমোদন না থাকায় তারা পাস করেও ইন্টার্ন করতে পারছেন না। ফলে তারা এমবিবিএস পাশ করেও ডাক্তারি পেশায় যেতে পারছেন না। শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ ও জান্নাত বলেন, কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছেন। তার কলেজে পর্যাপ্ত শিক্ষক ( প্রফেসর) নেই। অনুমোদন নেই বিএমডিসির। ক্লাস হয় না। এখানে ভর্তি হওয়ার পর আমার তার ছলচাতুরী জানতে পারি। তিনি এখান থেকে শিক্ষার্থীদের কাছে নানা ফি’র নামে লাখ লাখ নিয়ে অন্য জায়গায় ডেন্টাল কলেজ করছেন। অথচ আমাদের সমস্যা নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নেই। কিছু বললেই শুধু সময়ক্ষেপণ করেন। তাই বাধ্য হয়ে আমরা আন্দোলনে নেমেছি।জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুল ইসলাম স্বাধীন বলেন,একের পর এক নানা সমস্যার কারণে আমরা এখনো দাঁড়াতে পারি নি। তবে বিএমডিসির অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। তারা পরিদর্শনও করেছে। কিছু শর্ত দিয়েছে। সেগুলো পূরণের চেষ্টা চলছে। হয়তো দ্রæত আমরা অনুমতি পেয়ে যাবো। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালেও এই কলেজটির বিরুদ্ধে অবৈধভাবে শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগ উঠে। মেডিক্যাল কলেজের অনুমতি না থাকার পরেও ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এ নিয়ে ওইসময় বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। এরপর ২০১৫-১৬ সেশনে অনুমতি ছাড়ায় ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করায় পরীক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করে দেয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। কারণ কলেজটি ওই সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত ছিল।