বিশ্বজুড়ে তুমুল জনপ্রিয় কমেডি চরিত্র ‘মিস্টার বিন’। রোয়ান অ্যাটকিনসনের এই বিখ্যাত চরিত্রকে অনুকরণ করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন কমেডিয়ান নিগেল ডিক্সন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত চীনের হুবেই শহরে আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন ডিক্সন। কিন্তু নিজের দেশের সুরক্ষার্থে এখনই বাড়ি ফিরতে চান না এই ব্রিটিশ নাগরিক। বরং হুবেই থেকেই সচেতনতামূলক কমেডি তৈরি করে প্রশংসিত হচ্ছেন তিনি।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কেবল চীনেই এক হাজার একশ ১০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন। এছাড়া আরো ৪৪ হাজারের বেশি মানুষ কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বেঁচে থাকার জন্য লড়ছেন।করোনাভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশ চীনের সঙ্গে সব ধরনের বিমান ওঠানামা বন্ধ করে দিয়েছে। নিজেদের দেশের নাগরিক সরিয়ে নিয়েছে অনেক দেশই।
তবে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কেন্দ্রস্থল উহান শহর ছেড়ে চলে যাননি ‘মিস্টার বিন’ খ্যাত অভিনেতা ব্রিটিশ নাগরিক নিগেল ডিক্সন। তার দাবি, নিজেকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দিতে চান না। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি না জেনেই নিজের দেশে ফিরে গিয়ে অন্যদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে চান না তিনি। সে কারণে উহানেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
কেবল উহান শহরে থেকে যাননি তিনি। উহানে থেকেই করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সবাইকে সচেতন করার কাজে নেমেছেন। এরই মধ্যে করোনাভাইরাস নিয়ে ‘মিস্টার পিয়া’ নামে সচেতনতামূলক হাস্যরসাত্মক সিরিজ বের করেছেন। তারপর সেগুলো চীনের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
নিগেল ডিক্সন
৫৩ বছর বয়সী নিগেল ডিক্সন সবসময় রোয়ান অ্যাটকিনসনকে আইকন মানেন। ৩০ বছর বয়স থেকেই তিনি মিস্টার বিন চরিত্রে অভিনয় করে আসছেন। তিন বছর আগে চীনে কমেডি সিনেমায় অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয় তিনি। এবার করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতন করার জন্য ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
জানা গেছে, ২ জানুয়ারি তিনি উহানে যান। কয়েকদিন পরেই দেশে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তার। তবে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার জেরে তিনি আর ফিরে যাননি। ব্রিটিশ নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার খবরও ছিল তার কাছে। তাকে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি উহান ছেড়ে কেবল নিজের ভালোর কথা ভাবতে পারেননি।
জানা গেছে, কিভাবে নিজে পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে, কিভাবে মাস্ক পরতে হবে, কিভাবে অন্যদের থেকে নিরাপদ থাকা এবং অন্যদেরও নিরাপদ রাখা যায়- সেসব বিষয় নিয়ে কমেডি করছেন তিনি। মূলত, হাসির মধ্য দিয়ে সবাইকে সচেতন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। করোনাভাইরাসের প্রকোপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি উহান শহর ছাড়বেন না বলে ঠিক করেছেন।