দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর (১৪) সঙ্গে অবৈধভাবে মেলামেশা করার সময় এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়েছেন এক শিক্ষক।
উপজেলার ফতেজংপুর ইউনিয়নের হাসিমপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়া মো. লিখন ইসলাম (২৮) প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান হাসিমপুর মডেল স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক । একই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে ওই ছাত্রীর বাড়িতেই অবৈধভাবে মেলামেশার সময় এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়েন তিনি। তবে এ ঘটনায় কোনো পক্ষ থেকেই থানায় কোন অভিযোগ করেনি।
এ ঘটনায় শিক্ষক লিখন ইসলামকে বরখাস্থ করা হয়েছে। হাসিমপুর মডেল স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ জানান ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে তাকে বরখাস্থ করা হয়। জানাগেছে ওই শিক্ষক উপজেলার আলোকডিহি ইউনিয়নের কিষ্টহরি এলাকার কাউয়াশা পাড়ার বাসিন্দা এবং সে দুই সন্তানের জনক ।
এলাকাবাসীসহ ওই্ ছাত্রীর আপন চাচা জানায়, আমার ভাই ভাবী দুজোনেই দীঘ্রদিন ধরে ঢাকায় গার্মেসে চাকুরী করার সুবাদে আমার ভাতিজী সেখানেই লেখাপড়া করতো। কিন্তু ওখানে লেখাপড়ার খরচ অনেক বেশী হওয়ায় তাকে নিয়ে এসে সে তার দাদীর সঙ্গে এক সাথে থাকতো । এর পর তাকে হাসিমপুর মডেল স্কুলে সপ্তম শ্রেনীতে ভর্তি করে দেই। স্কুলের পাশেই আমাদের বাড়ি হওয়ায় সেই শিক্ষক আমার ভাতিজীর সাথে প্রায় বাড়িতে এসে কথাবার্তা বলতো। এছাড়া তারা মোবাইল ফোনেও দীঘ্র সময় ধরে কথা বলতো এবং তাদের ভিতর একটি সর্ম্পক তৈরী হয়েছিলো আমরা তা জানতে পাড়ি । এ ভাবে চলতে থাকলে তার দাদীসহ তাকে আমরা এ বিষয় নিয়ে একদিন মারধোর করি এবং সে ভয়ে স্বীকার করে বলে ওই স্যারের সাথে তার অনৈতিক সর্ম্পক রয়েছে । সে তাকেই বিয়ে করবে।
এ ঘটনার কিছুদিন পরেই গত ২৭ জানুয়ারী সোমবার সন্ধার সময় ওই শিক্ষককে আমার ভাতিজীর সঙ্গে আমাদের বাড়িতে হাতেনাতে আটক করি। এরপর তাকে পুলিশে দিতে চাইলে স্থানীয় প্রতিনিধিরা এসে কিছু টাকা নিয়ে বিষয়টি ঘরোয়া ভাবে মিটমাট করার কথা বলে। পরে বিষয়টি কোন টাকা পয়সা ছাড়াই ও ওই শিক্ষকের কোন শাস্তির ব্যবস্থা না করে ব্যাপারটি মিমাংসা করে। এ ঘটনার পর আমার ভাতিজী মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে এবং সে ওই শিক্ষকে বিয়ে করবে বলে জেদ ধরে বসে। পরে আমরা মানসম্মানের কথা চিন্তা করে তাকে জোড় করে তার বাবা-মার কাছে ঢাকা পাঠিয়ে দেই।
ওই এলাকার স্থানীয়রা জানায়, প্রায় দুই বছর ধরে তাদের এমন অবৈধ সর্ম্পক। মেয়েটির পরিবার অসহায় ও গরীব ছিলো বলে বিষয়টি নিয়ে কোন সু-বিচার পায়নি তারা । ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে স্থানীয় কয়েকজন তার পরিবারকে চাপ দিয়ে তারাতাড়ি তাকে ঢাকা পাঠিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এ দিকে মেয়েটির লেখাপড়াও নষ্ট হয়ে গেলো এবং তার নিজ এলাকা ছেড়ে তাকে চলে চলে যেতে হলো। স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবী এ রকম ঘটনায় আর যেন পূনরাবৃত্তি না হয় তাই ওই অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
অভিযুক্ত শিক্ষক লিখন ইসলাম তাদের সর্ম্পকের কথা ও হাতেনাতে ধরা খাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, তার ফুফি আমাকে ফোন করে ডেকে নিয়েছিলো এ জন্য সেখানে আমি ওইদিন গিয়েছিলাম। তারা আমাকে সে সময় আটক করে মারধোর করেছিলো । তবে আমি তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলাম।
এ বিষয়ে ফতেজংপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ লুনার ও ওই এলাকার ইউপি সদস্য আব্দুল কাশেমের এর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাদের পাওয়া যাইনি।