পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ভেড়ামারা উদয়ন একাডেমীতে এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র দিতে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত কোচিং ক্লাসের নামে এই টাকা আদায় করা হয়েছে। টাকা দিতে না পারায় অনেকেই রবিবার দুপুর পর্যন্ত বিদ্যালয় থেকে প্রবেশপত্র নিতে পারেনি। এ নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে প্রবেশপত্র না পাওয়া এক শিক্ষার্থী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, গত নভেম্বর মাসে এই বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৬২ জন, মানবিক বিভাগ থেকে ৪৭ জন ও হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৮ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করে। সে সময় পরীক্ষার ফরম পূরণেও শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশ অমান্য করে অতিরিক্ত অর্থ নেয়ার অভিযোগ উঠে বিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে। ফরম পূরণের পর থেকেই শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত কোচিং ক্লাসের ব্যবস্থা করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর জন্য প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য ৮০০ টাকা করে ফি ধরা হয়। সে সময় অনেকেই স্কুলে কোচিং ক্লাস করায় আপত্তি প্রকাশ করে। তবে কোচিং ক্লাস না করলে ব্যবহারিক পরীক্ষায় নাম্বার কম দেওয়া হবে বলে হুমকি দেয়ায় শিক্ষার্থীরা কোচিং ক্লাস করতে বাধ্য হয়। গত দুই মাস ধরে চলে এই কোচিং ক্লাস।
এরপর গত সপ্তাহ থেকে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রবেশপত্র দেয়া শুরু হয়। এতে কোচিং ফি বাবদ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৮০০ টাকা নিয়ে প্রবেশপত্র দেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী হতদরিদ্র হওয়ায় কোচিং ফির টাকা রবিবার দুপুর পর্যন্ত দিতে পারেনি। এতে ওইসব পরীক্ষার্থীর প্রবেশ পত্র আটকে রাখা হয়। পরে নিরুপায় হয়ে রবিবার দুপুরে এক পরীক্ষার্থী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পরীক্ষার্থী জানায়, জোরপূর্বক শিক্ষার্থীদের কোচিং ক্লাস করানো হয়। প্রাকটিক্যাল পরীক্ষার নাম্বার পাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীরা কোচিং ক্লাস করতে বাধ্য হয়। এমনকি কোচিং ক্লাস না করলেও বিদ্যালয়ে ফি দিতে হয়। অভাবের কারণে তাদের অভিভাবকরা টাকা দিতে না পারায় পরীক্ষার প্রবেশপত্র দিচ্ছে না বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে গত দুইদিন ধরে খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে সময় কাটছে তাদের।
তবে কোচিং ফির নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব হেদায়েতুল হক বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজেরাই প্রবেশপত্র নিতে দেরী করেছে। সেসব শিক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র নিতে দেরি করেছে তাদের কাছে রবিবার দুপুরের পরে পিয়ন দিয়ে প্রবেশপত্র পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই ওই পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্র পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। এছাড়া কোচিং ফির নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কোনো সুযোগ নাই। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।