রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের(রাবি) ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগে চলতি সপ্তাহে নিয়োগ পাওয়া তিন শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করেছেন আদালত। একইসঙ্গে ২০১৬ সালে দেওয়া বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী দরখাস্তকারীদের মধ্যে থেকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) এ সংক্রান্ত একটি রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারক মো. আশরাফুল কামাল ও রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বেঞ্চ এ রায় প্রদান করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৬ই নভেম্বর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মিজানউদ্দীনের আমলে তিনটি পদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে প্ল্যানিং কমিটি প্রভাষক পদে প্ল্যান্ট প্যাথলজি, জেনেটিক্স অ্যান্ড প্ল্যান্ট ব্রিডিং ও এগ্রোনমি/এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়। এসময় ৩৮টি আবেদন জমা পড়ে। কিন্তু ওই বিজ্ঞপ্তিতে পরে আর শিক্ষক নিয়োগ হয়নি।
তবে সেই বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনকারীদের আবেদন বহাল রেখে গত বছরের ৩০ জুলাই নতুন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বর্তমান প্রশাসন। কিন্তু নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে প্ল্যানিং কমিটিকে না জানিয়েই প্রভাষক পদে আবেদনের জন্য উল্লিখিত বিষয়গুলোর সঙ্গে ‘এগ্রিকালচারাল কেমিস্ট্রি’ বিষয় যুক্ত করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। নতুন বিজ্ঞপ্তিতে ৪৭টি আবেদন জমা পড়ে।
নতুন করে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির সদস্য অধ্যাপক আলী আসগর। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২১ আগস্ট বিভাগটিতে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি শুনানি শেষ হয়।
শুনানি চলাকালীন আদালত বিশ^বিদ্যালয়ের পক্ষের আইনজীবীকে বলেছিলেন এ বিষয়ে রায় ঘোষণার পূর্বে প্রশাসন যেন কোনো কিছু প্রসিড না করে। তা সত্তে¡ও গত রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকালে উপাচার্যের বাসভবনে শিক্ষক নিয়োগের ভাইভা বোর্ড শুরু হয়। ওইদিন সন্ধ্যাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯৭তম সিন্ডিকেট সভায় তাদের নিয়োগের বিষয়টি চ‚ড়ান্ত হয়। নিয়োগপ্রাপ্ত ওই তিন শিক্ষকের নাম শামসুন্নাহার, মুখতার হোসেন ও রেজভী আহমেদ ভুঁইয়া।
জানতে চাইলে বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়–য়া বলেন, বিভাগের প্ল্যানিং কমিটিকে না জানিয়েই প্রশাসন বিজ্ঞপ্তিতে কিছুটা পরিবর্তন করেছিল। তাই আদালত এই বিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগ পাওয়া তিন শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল ঘোষণা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে যেই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল আদালত সেই বিজ্ঞপ্তিতে যারা দরখাস্ত করেছিলেন আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তাদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে এখনও কিছু শোনেননি বলে প্রতিবেদককে জানান। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এম এ বারীকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।