ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার পাটুলীপাড়া গ্রামে একটি ফাঁকা বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে তিনশ’ ফুট নতুন লাইন নির্মাণ করতে গ্রাহকের কাছ থেকে ঠিকাদারের লোক দশ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রায় দেড় মাস আগে ওই লাইন নির্মাণ প্রকল্প পাস হলেও ঘুষ না দেয়ায় ঠিকাদার আজ পর্যন্ত কাজ শুরু করেননি। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে পাটুলিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ভুক্তভোগী সাজেদুল ইসলাম বুধবার পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ভাঙ্গুড়া জোনাল অফিসের সহকারী ব্যবস্থাপক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। সাজেদুল ইসলাম পেশায় একজন স্যানেটারী মিস্ত্রী।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের ৯৯ ভাগ বিদ্যুতায়িত পাটুলিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সাজেদুল ইসলাম গত বছরের শুরুতে গ্রামের একপাশে বসতবাড়ি নির্মাণ করে। পরে তিনি ওই বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে গত বছরের ২৬ মে তিনশ’ ফুট নতুন বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের জন্য পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ব্যবস্থাপক বরাবর আবেদন করেন। এর কিছুদিন পর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সহযোগিতায় দুটি স্টিলের খুঁটি অস্থায়ীভাবে পুঁতে তিনশ’ ফুট বৈদ্যুতিক লাইন টাঙিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ পান সাজেদুল। এক পর্যায়ে সাজেদুলের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত মাসে দুইটি খুঁটি সহ তিনশ’ ফুট লাইন নির্মাণ প্রকল্প পাস করে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। লাইন নির্মাণ কাজটি পায় পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর তালিকাভুক্ত ঠিকাদার মিজানুর রহমান। এরপর ঠিকাদার মিজানুরের পক্ষে ভাঙ্গুড়ার হারোপাড়া গ্রামের ইলেকট্রিশিয়ান সুুুজন আহমেদ ওই গ্রাহক সাজেদুলের বাড়ি গিয়ে লাইন নির্মাণের জন্য ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে। কিন্তু সাজেদুল টাকা না দেয়ায় আজ পর্যন্ত ঠিকাদার ওই লাইন নির্মাণ কাজ শুরু করেননি। এরপর থেকে সাজেদুল একাধিকবার ওই ইলেকট্রিশিয়ান ও ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে টাকা না দিলে ওই লাইন নির্মাণ করবেন না বলে জানিয়ে দেন তাঁরা। এঅবস্থায় পাশকৃত বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের জন্য ভাঙ্গুড়া জোনাল অফিসের ব্যবস্থাপক মনির হোসেনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী সাজেদুল।
অভিযোগের বিষয়ে ইলেকট্রিশিয়ান সুজন আহমেদ বলেন, ‘একটি নতুন বিদ্যুতের লাইন নির্মাণ করতে গেলে কিছু অতিরিক্ত খরচ হয়। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট লোকজনের খাওয়া-দাওয়া ও হাত খরচ বাবদ গ্রাহককে কিছু টাকা দিতে হবে। তাই আমি খরচ নিয়ে মধ্যস্থতা করে দ্রুত লাইন নির্মাণ কাজটি করে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু উনি টাকা না দেয়ায় সেটা সম্ভব হয়নি। এখন উনি নিজেই বিদ্যুৎ অফিসে দৌড়াদৌড়ি করুক।’
এ ব্যাপারে ঠিকাদার মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে ভাঙ্গুড়া জোনাল অফিসের সহকারী ব্যবস্থাপক মনির হোসেন বলেন, পাশকৃত লাইন নির্মাণ একটি সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করতেই হবে। এতে কোথাও গ্রাহকের টাকা খরচ হবে না। সহজ সরল গ্রাহক পেয়ে ঠিকাদার অবৈধভাবে টাকা দাবি করেছে। এ বিষয়ে ঠিকাদার ও ইলেকট্রিশিয়ানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।