নাজিম হাসান,রাজশাহী প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারার বাসুপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফর রহমানকে সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার করার অভিযোগ করা হয়েছে। স্থানীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এই অভিযোগ এনে লুৎফর রহমানসহ গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি ও সাজানো মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। তিনি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের শিকার বলেও সংাদ সম্মেলনে নেতাকর্মীরা দাবি করেছেন। গত বুধবার (২২ জানুয়ারি) ভোরে লুৎফর রহমানসহ পাঁচজনকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পাঁচ লাখ টাকার চাঁদার দাবিতে জাবের বাহিনীর প্রধান জাবের আলীর ভাই সাবের আলীকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে ঘটনার ছয়মাস পর বুধবার রাতে থানায় মামলা দায়ের করেন। এর পরেই তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।এর আগের দিন ইউনিয়নের মন্দিয়াল এলাকার জাবের বাহিনীর প্রধানকে পাঁচসহযোগিসহ পুলিশ গ্রেপ্তার করে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বাসুপাড়া ইউনিয়ন আ.লীগের দুই নম্বর ওয়ার্ড শাখার সভাপতি দেলোয়ার হোসেন। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, লুৎফর রহমান এলাকার একজন জনপ্রিয় নেতা। এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এলাকায় মাথা চাড়া দেওয়া জাবের বাহিনীর বিরুদ্ধে সোচ্চার হন তিনি। গত (১৯ ডিসেম্বর) পুলিশকে মারপিট করে বাহিনীর প্রধান জাবের আলীকে ছিনিয়ে নেন তাঁর সহযোগিরা। এই বিষয়ে বিভিন্ন গণ মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রচার হলে তিনি জাবের বাহিনীর বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ বাহিনীর প্রধান জাবের আলী ও তাঁর পাঁচ সহযোগিকে গ্রেপ্তার করে। এর একদিন পরে ছয় মাস আগে গত বছরের ১৬ জুলাইয়ের একটি ঘটনা দেখিয়ে জাবের বাহিনীর প্রধানের ভাই সাবের আলী বাদী হয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে থানায় মামলা করেন। তিনি মামলার সত্যতা বিষয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, যদি লুৎফর রহমানসহ অন্যরা চাঁদার দাবিতে বাদীকে আটকে রেখে মারপিট করে থাকে তাহলে এতোদিন পরে কেন মামলা করলেন। সে সময় থানাতেও কোন অভিযোগ করা হয়নি। জাবের বাহিনীকে রক্ষার জন্য এবং তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতিত লোকজনদের দায়ের করা মামলা দুর্বল করার জন্যই সাজানো মামলা করা হয়েছে। জাবের বাহিনীর হাতে নির্যাতিত ও অভিযোগকারীদেরই এই সাজানো মামলায় তাঁদেরই আসামি করা হয়েছে। পুলিশ হয়রানীমূলক ভাবে দলীয় বিভিন্ন নেতার বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়। নেতাদের এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, বাদী এতোদিন নিজের নিরাপত্তার কারণে মামলা করতে পারেননি। তদন্তে সত্যতা পাওয়া না গেলে মামলা হতে অব্যাহতি দেওয়া হবে। সংবাদ সম্মেলনে নেতারা আরও বলেন, লুৎফর রহমানের পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি হাস্যকর ছাড়া কিছুই নেই। তিনি চাঁদা দাবি ও নির্যাতন করতে পারেন এমন অভিযোগ এলাকার কোনো ব্যক্তি বিশ^াস করতে পারে না। সম্মেলনে নেতারা বলেন, লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করার কারণে জাবের বাহিনী তাদের অপতৎপরতা অব্যাহত রাখবে। এই মামলা দিয়ে লুৎফর রহমানের জনপ্রিয়তা ঠেকানো যাবে না বলে মন্তব্য করেন তারা। তাঁরা অবিলম্বের লুৎফর রহমানসহ গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি ও সাজানো মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। একই সঙ্গে অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে বলেন, যদি তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে শাস্তি হোক। অন্যথায় তাঁদের মুক্তি দেওয়া হোক। এসময় সম্মেলনে ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের ১৩জন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, আমজাদ হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, সাজেদুর রহমান, মকবুল হোসেন, নাজির উদ্দিন, ইদ্রিস আলী, মনসুর রহমান, আবেদ আলী, আসাদুল ইসলাম, আব্দুল হান্নান প্রমুখ।#