বেনাপোল কাস্টমস হাউসে মিথ্যা ঘোষনা দিয়ে মোটর সাইকেল আমদানির নামে সরকারের ৫০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাকির ঘটনা ধরা পড়েছে। তদন্ত করা হচ্ছে আরো একশ’ কোটি টাকার রাজস্ব ফাকির ঘটনা।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের সুত্র জানান, ঢাকার আমদানি কারক প্রতিষ্ঠান টিভিএস বাংলাদেশ লি: বেনাপোল বন্দর দিয়ে মোটর সাইকেলের শতশত কমপ্লিট চালান আমদানি করে। আমদানিকৃত কমপ্লিট মোটর সাইকেলের পরিবর্তে মিথ্যা ঘোষনা দিয়ে খুচরা যন্ত্রাংশের ট্যাক্স পরিশোধের মাধ্যমে কয়েক’শ চালান খালাশ করে সরকারের একশ’ কোটি টাকার রাজস্ব ফাকি দিয়েছে। শুল্ক ফাকির ঘটনা কেন্দ্রীয় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর উদঘাটন করতে সক্ষম হয়। পার্টস ঘোষনা দিয়ে এইচ এস কোড ৮৭১৪.১০.৯০ এর বিপরীতে ৫৮.৬০ % শুল্ক কর পরিশোধ করে সিপিসি ৬৮০ এর সুবিধা নিয়ে রেয়াতি হারে বিপুল সংখ্যক পণ্য খালাশ করে প্রাথমিক অবস্থায় সরকারের ৫০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাকি দেয়। প্রাথমিক তদন্তে শুরুতেই ২৮ টি চালানের বিপরীতে এত বড় ধরনের শুল্ক ফাকির ঘটনা ধরা পড়ে। এলসি সংক্রান্ত যাবতীয় বানিজ্যক দলিলাদির তথ্য ব্যাংক হতে সংগ্রহ করা হয়। ক্ষেত্র বিশেষ এলসিতে পণ্যের বর্ননা সিকেডি কন্ডিশন রয়েছে।
এ ছাড়া সকল এলসি ও বি/ই এর পণ্যের রফতানিকারকের প্রিমিসিস হতে পন্য কন্টিনার ও ট্রাকে করে রফতানি বন্দর পরিবহন কালে ইস্যুকৃত ট্রাক রিসিট পর্যালোচনা করে শুল্ক গোয়েšদা জানতে পারে পণ্যের বর্ননা ও এইচ এস কোড সিকেডি কন্ডিশন রয়েছে এবং ইনভয়েজ ও প্যাকিং লিস্ট এর সাথে সংযুক্ত। আমদানিকারক ও সংশ্লিস্ট সিএন্ডএফ এজেন্টস প্রতিষ্ঠান পার্টস ঘোষনায় এইচ এস কোড ৮৭১৪.১০.৯০ এর বিপরীতে ৫৮.৬০ % শুল্ক কর জমা দিয়ে সিপিসি ৬৮০ এর সুবিধা নিয়ে রেয়াতি হারে বিপুল সংখ্যক পণ্য চালান খালাশ করে জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারের ৫০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাকি দিয়েছে। এরুপ শুল্ক ফাকি আলোচ্য পণ্য চালানের এলসি ইনভয়েজ ও প্যাকিং লিস্ট এর সাথে মিল রয়েছে। ঢাকার আমদানি কারক টিভিএস অটো বাংলাদেশ লি: (যার বিন নাম্বার-১৮০৫১০১৩৪৪২) নামীয় প্রতিষ্টান ও বেনাপোল সিএন্ড এফ এজেন্ট মেসার্স শামসুর রহমান (কাস্টমস এ আইএন নাম্বার -৬০১৮৮০০০২) যার মালিক আলহাজ্ব শামছুর রহমান ও সুজন এন্টারপ্রাইজ (কাস্টমস এ আইএন নাম্বার- ৬০১০৩০০১৪) যার মালিক মোস্তাফিজুর রহমান সুমন সহ একাধিক আইএন নং ব্যবহার করে দীর্ঘ দিন যাবৎ জালিয়াতির মাধ্যমে এ ধরনের শুল্ক ফাকি দিয়ে আসছে। তা ছাড়া বিভিন্ন পণ্য ছাড় করানোর সময় জাল দলিলাদি দাখিল করে ও মিথ্যা ঘোষনা প্রদান করে শুল্কায়ন কালে শুল্ক ফাকি দিয়ে পন্য চালান খালাশ করে আসছেন এ প্রতিষ্ঠানটি।
এরুপ অলোচ্য পন্য চালানে এলসি, ইনভয়েজ ও প্যাকিং লিস্ট জালিয়াতি করে শুল্ক ফাকি ও মানি লন্ডারিং করা হয়েছে বলে শুূল্ক গোয়েন্দার তদন্তে বলা হয়েছে। ঢাকা শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আমদানিকারক ও সংশ্লিস্ট সিএন্ডএফ এজেন্ট এর যোগসাজসে এত বড় ধরনের শুল্ক ফাকির ঘটনা বিরল। সংশ্লিস্টদের বিরুদ্ধে মানি লংন্ডালিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী -২০১৫) এর দারা ২(শ) এর (১৮) আইনের ৪ ধারায় রাজস্ব ফাকির অর্থ আদায় করে মানি লংন্ডারিং মামলা করার সুপারিশ করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধিন রয়েছে বলে বেনাপোল কাস্টমস শুল্ক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান।