কিশোরগঞ্জে ট্রাফিক ব্যবস্থার অনিয়মের আড়ালে কে? স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির শেষ নেই পর্ব-২

মোঃ খায়রুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ ঃ
ঐতিহ্যবাহী কিশোরগঞ্জ পৌরসভার ট্রাফিক ব্যবস্থার অনিয়মের অন্যতম কারণ হিসেবে প্রশাসনের উদাসিনতা ও পৌর কর্তৃপক্ষের নিরবতাকে দায়ী করছে কিশোরগঞ্জের সচেতন মহল।
কিশোরগঞ্জের ট্রাফিক পুলিশের অবৈধ অর্থ বাণিজ্যের কারণে কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর ভোগান্তির শেষ নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি আদর্শ শিশু বিদ্যালয়, এস.ভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ সরকারি বালক বিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সহ কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জজ কোর্ট ও পৌরসভা কাছাকাছি থাকায় প্রতিদিন লক্ষাধিক লোকের বাহির থেকে আগমন ঘটে। পাশাপাশি সদর উপজেলার সাথে হোসেনপুর, করিমগঞ্জ, তাড়াইল, কটিয়াদী ও ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মানুষের নিত্য নতুন হাটবাজার থেকে শুরু করে জীবনের প্রতিটি কাজে এই কিশোরগঞ্জ শহরের ভূমিকা অন্যতম। এসব সুবিধাকে পুঁজি করে কিশোরগঞ্জে গড়ে উঠেছে নাম সর্বস্ব অটো বাইক মালিক সমিতি, শ্রমিক সমিতি। কয়েকদিন পর পর পরিবর্তন হয় তাদের কমিটি। মোটা অংকের বিনিময়ে পৌরসভার কিছু অটো রিকসার অনুমোদন হলেও অদৃশ্য শক্তির বলে আটকে আছে হাজার হাজার অটো রিকসার পৌরসভার অনুমোদন। অন্যদিকে ব্যাঙ এর ছাতার মতো গড়ে উঠা বিভিন্ন সমিতি কিশোরগঞ্জ ট্রাফিক ইন্সপেক্টর করিম ও এটিএইচ আই রফিক এর মাধ্যমে শক্তিশালি সিন্ডিকেট গড়ে তুলে পৌরসভার অনুমোদনবিহীন গাড়িগুলোকে শহরে ঢোকার জন্য মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অন্যদিকে দুর দুরান্ত থেকে রোগী নিয়ে আসা, স্কুল ও কলেজ গামী শিক্ষার্থী ও আদালতের কাজে লোকজনকে নিয়ে আসা বাহিরের অটোগুলোকে শহরে প্রবেশকালে “পৌরসভা যানজট নিরসন” নামে ব্যানারের দালালচক্র যাত্রী নামিয়ে যাওয়ার পথে পুরানথানা, বটতলা ও গাইটাল এলাকার পয়েন্টে আটক করে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা আদায় করছে। যার অর্ধেক যাচ্ছে পুলিশ প্রশাসনে, বাকীটা দালাল চক্রে। অভিযোগ উঠেছে ঐ সব দালাল ব্যতিত কোন গাড়ি পুলিশ প্রশাসন ছাড়ছে না। গুরুতর অভিযোগ উঠেছে পুলিশ লাইনে আটককৃত অটো রিকসা, টমটম, ভ্যান, নছিমন ইত্যাদি গাড়িগুলো প্রতিদিন কি পরিমান আটক হচ্ছে, কে বা কারা কিভাবে ছাড়িয়ে নিচ্ছে তার আদৌ কোন তালিকা নেই পুলিশ প্রশাসনের কাছে। যার ফলে প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে প্রশাসনের সহযোগিতায় এই দালাল চক্র। উক্ত বিষয়ে উপরস্থ প্রশাসন জেনেও না জানার ভান করে চলছে। রাজনৈতিক অঙ্গনেও রয়েছে নিরবতা। যার ফলে স্কুলগামী, কলেজগামী শিক্ষার্থী ও পৌর এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাসকারীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বাসভবন ও জেলা জজের বাসভবনের রাস্তায় প্রতিদিন যানজটের কারণে শিক্ষার্থীদের দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে।