প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বুধবার ভোররাতে ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কোনও সৈন্য মারা যায়নি, ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে খুবই সামান্য।
হোয়াইট হাউজে সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতি দেওয়ার সময় হামলার বদলা নেওয়ার কোনও হুমকি দেননি ট্রাম্প।
বদলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ইরান যদি পারমানবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা বাদ দেয় এবং তার ভাষায়, সন্ত্রাসের পথ ত্যাগ করে, তাহলে শান্তি স্থাপনেও তিনি প্রস্তুত।
ইরান যে নতুন কোনও হামলা চালানোর সম্ভাবনা নাকচ করেছে তাকে ‘ইতিবাচক’ বলে বর্ণনা করেন ট্রাম্প।
‘তারা যে ক্ষান্ত দিয়েছে সেটা সবার জন্যই মঙ্গল।’
গত ক’দিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে যে ধরণের সামরিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি তিনি দিচ্ছিলেন আজ তার কিছুই ট্রাম্পের কন্ঠে শোনা যায়নি।
তবে সাংবাদিকদের সামনে তার সংক্ষিপ্ত বিবৃতির শুরুতেই ট্রাম্প বলেন, তিনি যতদিন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থাকবেন ইরানকে পারমানবিক অস্ত্র অর্জন করতে তিনি দেবেন না।
তিনি বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে তিনি নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ দেবেন যা ততদিন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে যতদিন ‘ইরান তার আচরণ না বদলাবে।’ তবে এ ব্যাপারে তিনি ভেঙে কিছু বলেননি।
তিনি বলেন, ১৯৭৯ সাল থেকে ইরানের বহু আপত্তিকর কর্মকাণ্ড সহ্য করা হচ্ছে, অনেক হয়েছে আর নয়। তবে একইসাথে তিনি বলেন, ইরান একটি মহান দেশ হতে পারে, সে যোগ্যতা তাদের রয়েছে। আমাদের সবার এখন উচিৎ ইরানের সাথে নতুন একটি চুক্তির চেষ্টা করা যাতে করে বিশ্ব নিরাপত্তা বাড়ে।
ইরাক থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের যে দাবি ইরাকের পার্লামেন্ট করেছে, সে ব্যাপারে কোনও কথা বলেননি ট্রাম্প।
তবে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের তেলের কোনও প্রয়োজন আমেরিকার নেই। একইসাথে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে অধিকতর ভূমিকা নেওয়ার জন্য নেটো জোটকে বলবেন।
কাসেম সোলায়মানিকে হত্যার পক্ষে আবারো যুক্তি তুলে ধরেন তিনি। নিহত ইরানি জেনারেলকে সন্ত্রাসী হিসাবে আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, তার হাত হাজার হাজার ইরানি এবং আমেরিকানের রক্তে রঞ্জিত ছিল।
আমেরিকার ‘মুখে চপেটাঘাত’
এর আগে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনি বলেন, ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার মাধ্যমে তারা আমেরিকার ‘মুখে চপেটাঘাত’ করেছেন।
‘গতরাতে আমরা তাদের মুখে চড় মেরেছি।’
১৯৭৮ সালের কোম বিক্ষোভের স্মরণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আয়াতোল্লাহ খামেনি এ কথা বলেন। এ সময় সমবেত জনতা ‘আমেরিকার ধ্বংস চাই বলে শ্লোগান’ দেয়।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেন, যখন সংঘাতের প্রসঙ্গ আসে তখন এ ধরণের সামরিক হামলা যথেষ্ট নয়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, (মধ্যপ্রাচ্যে) আমেরিকার উপস্থিতি শেষ করে দেয়া।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিও বলেন, আমেরিকাকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে বিতাড়িত করতে পারলেই কাসেম সোলেইমানির হত্যার প্রতিশোধ নেওযা হবে। খবর: বিবিসি বাংলা।