রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় উৎপাদিত শবজি মুলার দাম কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। এ মৌসুমের শুরুতে কৃষকরা বেশী দাম পেলেও বর্তমানে দাম কম হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। চাষাবাদ খরচ না ওঠায় অনেকের জমিতেই পড়ে আছে মুলা। মুলা বিক্রি করে শ্রমিকের মজুরী হয়তো উঠবেনা সেই আশংকায় মুলাচাষীরা জমিতেই ফেলে রেখেছেন। মুলাচাষী আফজাল জানান,আড়াই বিঘা জমিতে মুলাচাষ করে বিপাকে পড়েছেন তিনি। সামান্য পরিমান জমির মুলা উঠিয়ে তা বাজারে বিক্রি করে পরিবহন ও শ্রমিকের খরচ যুগিয়েছেন মাত্র। অবশিষ্ট জমির মুলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বলে জানান তিনি। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসূমে বাগমারায় ৬১৫ হেক্টর জমিতে মুলা চাষ হয়েছে। যা গত বারের চেয়ে একটু বেশী। কৃষকরা জানান, আগাম উত্তোলনের পর খুচরা বাজারে ৪০/৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে ৫থেকে ৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মুলাচাষীরা জানান, ২০০/৩০০ টাকা মন দরে তারা আড়তে মুলা বিক্রি করেছেন। মজুরী খরচ না ওঠার আশংকায় ২বিঘা জমিতে মুলা নষ্ট হতে চলেছে। উৎপাদন খরচ না ওঠায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। অপরদিকে উপজেলার তাহেরপুর হাটে শবজি আড়তে কম দামেই কৃষকদের কাছ থেকে মুলা কিনছেন ব্যবসায়ীরা। সেখানকার আড়ৎদারের জানান, বর্তমানে মুলার দাম কমে যাওয়ায় ব্যাবসায়ীরা মুলা কেনার আগ্রহ হারিয়েছেন। ওই আড়তে মুলা কিনতে আসা বগুড়া জেলার ব্যাবসায়ী আলিম ও নাটোরের সালাম জানান, দুই জনে ১৩ হাজার টাকা মুলা কিনেছি। এবং নিয়ে যেতে গাড়ি ভাড়া দিতে হবে অনেক টাকা। তাছাড়াও প্রতি বস্তা মুলার পেছনে বস্তা, সুতলি, শ্রমিক, খাজনা ইত্যাদি বাবদ অতিরিক্ত হাজার হাজার টাকা খরচ হয়। বর্তমানে এ ব্যবসা করে লাভের মুখ দেখছেন না বলে জানান তারা। উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২ পৌরসভার প্রায় সব এলাকায় কম বেশী মুলা চাষ হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশী মুলার চাষাবাদ হয়েছে মাড়িয়া ইউনিয়নে। ওই ইউনিয়নের বলিদাপাড়া, বালিয়া, কাঠালবাড়ি, নিমপাড়া, লাড়ুপাড়া, দাসপাড়া, চাম্পাকুড়ি, কাহিতপাড়া, যাত্রাগাছি ও কালাপাড়াসহ বেশ কয়েক গ্রামের কৃষকরা মুলা চাষ করে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন বলে কৃষকরা জানান। এ চাষে তারা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে জানান তারা। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর বলছেন,মুলা উত্তোলনের প্রথম দিকে দাম বেশী ছিল। এবং কৃষকরা তখন অধিক হারে টাকা পেয়েছে। কিন্তু বর্তমানে বাজারে মুলাসহ অন্যান্য শবজির সরবরাহ বেশী থাকায় মুলার দাম কমে গেছে।