সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে জীবিকার উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া পাড়ি জমিয়েছিলেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের কুবিরদিয়ার দাসপাড়া গ্রামের সন্তোষ দাসের ছেলে মঙ্গল কুমার দাস (২৬)। স্বপ্ন ছিল পরিবারের সবার মুখে হাঁসি ফোটাবে, নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে স্বাবলম্বি হবে। কিন্তু এই স্বপ্ন পুরণ হলো না তার। বুধবার (১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় ভোর রাতে ষ্ট্রোক করে মৃত্যু বরন করে সে।
মঙ্গল দাসের মৃত্যুর সংবাদ বুধবার সকালে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে পরিবারের মধ্যে শুরু হয় শোকের মাতম। তার এই অসময়ে চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছেন না স্বজন পাড়া প্রতিবেশীরা। তবে তার অসুস্থ বাবা মা মৃত্যুর সংবাদ জানতে পারলে সেটা সহ্য করতে পারবেন না বলে কেউই মঙ্গলের মৃত্যুর খবর জানায় নি। তারা জানেন মঙ্গল অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে।
নিহত মঙ্গল দাসের বড় ভাই রাজু দাস জানান, ধার দেনা করে জীবিকার সন্ধানে প্রায় দেড় বছর আগে আমরা তাকে মালয়েশিয়ায় পাঠাই। তার আয়ে সংসারে ফিরেছিলো স্বচ্ছলতা। কিন্তু তার এই মৃত্যুর কারণে সব যেন শেষ হয়ে গেলো।
তিনি আরো জানান, মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে ১শ’ কিলোমিটার দুরে সিলেঙ্গার জেলার জালান কাপফার এলাকার লিনহু নামের একটি কাঠের কোম্পানীতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন তিনি। মঙ্গলবার রাতে পরিবারের সদস্যদের সাথে এবং এলাকার অনেক বন্ধু শোভাকাংখীদের সাথে ফোনে কথা বলে অনেক রাতে ঘুমাতে যায় মঙ্গল। সকালে সে বিছানা থেকে না উঠলে তার সাথের সহকর্মীরা তার রুমে গিয়ে বিছানায় মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। তারা জানিয়েছে হয়তো ঘুমের মধ্যেই রাতের কোন এক সময় সে ষ্ট্রোক করে মারা গেছে।
নিহত মঙ্গল দাস ৫ ভাই ২ বোনের মধ্যে সে ছিল ৪ নম্বর। মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে তার ভাই বোনেরা বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। মঙ্গলের এ মৃত্যুর মাধ্যমে মৃত্যু ঘটেছে তার সহ পরিবারের সবার স্বপ্নের। মৃত্যু হয়েছে একটি সুন্দর ভবিষ্যত সম্ভাবনার। মরদেহ দেশে আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের কাছে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছে নিহতের পরিবার।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মোহাম্মদ রায়হান জানান, পরিবারের সাথে কথা বলে মালয়েশিয়ায় নিহত মঙ্গল দাসের মরদেহ যাতে দ্রুত দেশে আনা যায় সে বিষয়ে প্রশাসনিকভাবে আমরা চেষ্টা করবো। এছাড়া সরকারি সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি পরিবারটির পাশে দাঁড়াবে প্রশাসন।