বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী গুরুদাসপুরের তিন বন্ধুকে বিজয় দিবসে সম্মাননা

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যার প্রতিবাদ করে কারাভোগকারী নাটোরের গুরুদাসপুরের তিনবন্ধু প্রবীর কুমার বর্মন, নির্মল কর্মকার ও অশোক কুমার পালকে কারামুক্তির ৪৩ বছর পর সম্মাননা জানিয়েছে উপজেলা উপজেলা প্রশাসন। তাদের সম্মান জানিয়ে তিনটি বিশেষ আসনেরও ব্যবস্থা করে উপজেলা প্রশাসন।

অনুষ্ঠান শেষে তাদের ক্রেস্ট দিয়ে সম্মানিত করা হয়। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সোমবার উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত কুচকাওয়াজ, অভিবাদন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিন বন্ধুকে এ সম্মান জানানো হয়। গত ৪৩ বছরে প্রথমবারের মতো গুরুদাসপুর উপজেলা প্রশাসন তাদের সম্মান জানানোয় আবেগ আপ্ল“ত হয়ে পড়েন তারা।

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তমাল হোসেন বলেন, মহান বিজয় দিবসের এই শুভক্ষণে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদকারী তিন বন্ধুকে সংবর্ধিত করতে পেরে উপজেলা প্রশাসনও খুশি । ভবিষ্যতেও তাদের পাশে থাকবে উপজেলা প্রশাসন।

উলে­খ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার একদিন পর বিচার চেয়ে গুরুদাসপুরের এই তিন বন্ধুর প্রতিবাদ ছিল দেশের উত্তরাঞ্চলে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রথম প্রতিবাদ। হত্যার বিচার চাওয়ায় ‘বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টা’র অভিযোগে দুই বছরের ডিটেনশন ও ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ডসহ ২৯ মাস কারাভোগের পর ১৯৭৭ সালে মুক্তি পান তিন বন্ধু প্রবীর, নির্মল ও অশোক।

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী হিসেবে সরব ভ‚মিকার কারনে তিন জনের প্রত্যেকের পরিবারকে মূল্য দিতে হয়েছে পরবর্তীতে। ছাত্রাবস্থায় কারাবরণ, তৎকালীন আইনশৃঙ্খা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্যাতন ও নিজেদের ভিটেমাটি প্রভাবশালীদের দখলে চলে যাওয়ায় আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি তিনজন।
স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির রক্তচক্ষু মোকাবিলা করে কোনরকমে টিকে ছিলেন তারা। হত্যাকান্ডের ৪৩ বছর পর মহান বিজয় দিবসের দিন তাদের এ সম্মাননা প্রদান করা হল।