শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার চাকধ গ্রামে এক আমেরিকা প্রবাসীর স্ত্রী, স্কুল শিক্ষিকার ওপর সন্ত্রাসীদের হামলা মারপিট ও চাঁদা দাবী করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শরীয়তপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ২জন সাংবাদিক সহ ১০জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য নড়িয়া থানার ওসি’কে নির্দেশ দিয়েছে।
মামলার বিবরনে জানা গেছে, নড়িয়া উপজেলার ভুমখাড়া ইউনিয়নের চাকধ গ্রামের দুলাল খান শরীফ দীর্ঘদিন যাবত আমেরিকা থাকে। তার স্ত্রী উম্মে কুলছুম পাটদল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষিকা। বাড়িতে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে তিনি। এ অবস্থায় আরটিভি শরীয়তপুর প্রতিনিধি ইব্রাহিম হোসাইন, এশিয়ান টিভি উপজেলা প্রতিনিধি রকি সহ কয়েকজন সন্ত্রাসীরা প্রবাসীর স্ত্রী ও সন্তানদেরকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার জন্য হুমকি ধমকি ও চাঁদা দাবী করে আসছিল। উপায়ান্ত না পেয়ে প্রবাসীর স্ত্রী উম্মে কুলছুম গত ২৮ নভেম্বর কোর্টে একটি মামলা দায়ের করে। এ মামলার সংবাদ পেয়ে সন্ত্রাসীরা তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৮ ডিসেম্বর সকাল অনুমান ১১টায় দেশীয় অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার বাড়িতে প্রবেশ করে প্রবাসীর স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে জীবনে শেষ করার হুমকি দেয়। এ সময় শিক্ষিকা ঘর থেকে বের হয়ে কারন জানতে চাইলে তাকে কিল ঘুষি লাথি মেরে ও পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। এসময় তার মেয়ে হুমায়রা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা তার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। সন্ত্রাসীরা তার গলার স্বর্নের চেইন ছিনিয়ে নেয় এবং নাঈম শেখ প্রবাসীর স্ত্রীর গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার চেষ্টা করে। সন্ত্রাসীরা তাদের ঘরের ভিতরে ঢুকে দরজা জানাল ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন করে। সন্ত্রাসীরা তার ঘরের আলমারী ভেঙে নগদ ১ লাখ টাকা ও ৪টি স্বর্নের চেইন, ৪ভরি ওজনের ২টি স্বর্নের হার, ৪টি স্বর্নের আংটি, ২জোড়া স্বর্নের কানের দুল, ১টি হিরার আংটি নিয়ে যায়। তাদের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা তাদেরকে ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। সন্ত্রসীরা চলে গেলে স্থানীয়রা আহতদেরকে উদ্ধার করে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় নড়িয়া থানায় অভিযোগ দাখিল করলে পুলিশ মামলাটি গ্রহন করেনি। ফলে প্রবাসীর স্ত্রী উম্মে কুলছুম বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার আরটিভির শরীয়তপুর প্রতিনিধি ইব্রাহিম হোসাইন, এশিয়ান টিভির উপজেলা প্রতিনিধি রকি সহ ১০জনকে আসামী করে শরীয়তপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। আদালতের বিচারক মামলা টি নড়িয়া থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
মামলার বাদী প্রবাসীর স্ত্রী উম্মে কুলছুম বলেন, সাংবাদিক ইব্রাহিম সহ কিছু সন্ত্রাসী আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার জন্য হুমকি ধমকি দেয় এবং চাঁদা দাবী করে। আমি আদালতে মামলা করলে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বাড়িতে হামলা করে আমাকে ও আমার মেয়েকে মারপিট করে। সন্ত্রাসীরা আমার ঘর থেকে নগদ টাকা ও স্বর্নালংকার নিয়ে যায় এবং আমাকে জীবনে শেষ করার চেষ্টা করে। আমি আদালতে মামলা করেছি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
বাদী পক্ষের আইনজীবী ও শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা বাদী পক্ষে আদালতে মামলা দাখিল করেছি। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য ওসি নড়িয়া থানাকে নির্দেশ দেয়।