আগামী ২০২০সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে পারে পৌর নির্বাচন। নির্বাচনের এক বছর বাঁকি থাকলেও এরই মধ্যে শুরু হয়েছে পৌর নির্বাচন নিয়ে আলোচনা। নির্বাচনকে সামনে রেখে শীতের সকালে চায়ের কাপে বইছে সিংড়া পৌর নির্বাচনের ঝড়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা ভিতরে ভিতরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বড় দুই দলের প্রার্থী সিলেকশনে হেরফের হলে বিদ্রোহী অথবা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সুযোগ নিতে পারে।
তবে আগামী পৌর নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নেতা ও বর্তমান পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌসকে পুনরায় সিংড়া পৌরসভার মেয়র প্রার্থী হিসেবে সিলেকশন করেছে উপজেলা আলীগ।তবে আওয়ামীলীগের অপর অংশ এর বিরোধিতা করছেন।
জানা যায়, ১৯৯৯ সালে সিংড়াকে পৌরসভা হিসেবে ঘোষনা করা হয়। সে সময় বিএনপির মেয়র হিসেবে একটানা ১৭বছর দায়িত্ব পালন করেছেন মরহুম অধ্যাপক শামিম আল রাজি।
২০১৬সালের নির্বাচনে পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ স¤পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস অধ্যাপক শামিম আল রাজিকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন। মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর জান্নাতুল ফেরদৌস সকল সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি আধুনিক পৌরসভা উপহার দিয়েছেন। মেয়রের সাড়ে তিন বছরে শহরবাতি ও পৌরবাসীর ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এবং রাস্তা-ঘাট উন্নয়নসহ শহররক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করেছেন তিনি।
তবে গত ২৯ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এড.জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিকের বিরোধ তুঙ্গে রয়েছে। তবে এই বিরোধ আগামী পৌর নির্বাচনের আগে মিমাংসা না হলে সুযোগ নিতে পারে বিদ্রোহী অথবা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
বর্তমানে সিংড়া পৌরসভায় আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন, বর্তমান পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস, অধ্যক্ষ গোলাম মহিউদ্দিন টিপু,আদনান মাহমুদ।বিএনপিতে শাখাওয়াত হোসেন সাখা, সাবেক কাউন্সিলর মহিদুল ইসলাম, আবদুলাহ-আল কাফি, জাতীয় পাটির আবুল কালাম আজাদ ও জামতলী আমজাদ হোসেন মেমোরিয়াল কারিগরি স্কুলের সুপারিটেনডেন্ট ও সাবেক উপজেলা যুবদল সভাপতি আতিকুর রহমান লিটন।
সিংড়া পৌরসভায় মোট ভোটার ২৫হাজার ৪৫০জন। এরমধ্যে পুরুষ ১২হাজার ৫০৭ ও নারী ভোটার ১২হাজার ৯৪৩জন।
চলনবিল মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মহিউদ্দিন টিপুর এলাকায় সুনাম থাকায়, তার ঘনিষ্টরা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছেন। আর পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মো.শাখাওয়াত হোসেন সাখার দাবী নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন।
তবে অধ্যক্ষ গোলাম মহিউদ্দিন টিপু নির্বাচনের ব্যাপারে মুখ খোলেননি। তবে তার ঘনিষ্টজনরা ভিতরে ভিতরে নির্বাচনের প্রস্ততি নিচ্ছেন।
পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আবদুলাহ-আল কাফি বলেন, নির্বাচিত হয়ে শহরবাসীর উন্নয়নে নিজেকে বিলিয়ে দিতে চাই এবং শামিম আল রাজির অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে চাই।
সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী শিশু পার্ক ছাড়া বাকি সব কাজ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে শহরবাতি ও পৌরবাসীর ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এবং রাস্তা-ঘাট উন্নয়নসহ শহররক্ষা বাঁধের কাজ চলমান রয়েছে। বরাদ্দের অভাবে লেক উন্নয়ন করা যাচ্ছে না। দল আমাকে পুনরায় মনোনয়ন দিলে শিশুপার্কসহ অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা হবে।
তবে বিএনপির দাবী, পৌরবাসীর আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে পারেননি মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস।
জাতীয় পাটির সাধারণ স¤পাদক আব্দুস সালাম জানান, প্রাথমিক ভাবে পৌর নির্বাচনে জাতীয় পাটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদকে সিলেকশন করা হয়েছে।
পৌর অঅ’লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক জানান, সমন্বয় না করে প্রার্থী দেয়া হলে ফলাফল শুন্যর কোটায় দাঁড়াবে।
তিনি বলেন,প্রতিমন্ত্রী কাউকে প্রার্থী সিলেকশন দিতে পারেন না। পৌর নির্বাচনের প্রার্থী সিলেকশন দিবেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এড.ওহিদুর রহমান শেখ বলেন, বর্তমান মেয়র ও পৌর আ’লীগের সাধারণ স¤পাদক জান্নাতুল ফেরদৌসকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব দাউদার মাহমুদ বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিতে কেন্দ্রিয় নির্দেশনা রয়েছে। জেলা বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করেই প্রার্থী ঘোষনা করা হবে।