সিলেটের বিশ্বনাথে জোরপূর্বক বিষ খাইয়ে পিতাকে হত্যা করার অভিযোগে সৎ মাকে প্রধান অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করেছে কন্যা। উপজেলা অলংকারী ইউনিয়নের বড়তলা গ্রামের বাসিন্দা ও জোরপূর্বক খাওয়ানো বিষক্রিয়ায় মৃত্যুবরণকারী মুক্তার মিয়ার কন্যা রেজিয়া বেগম (২২) বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলা নং ২ (তাং ২.১২.১৯ইং)।সৎ মা জিয়াছমিন বেগম (৩৫)’কে প্রধান অভিযুক্ত করে নিহতের কন্যা রেজিয়া বেগমের মামলার অভিযুক্তরা হলেন- অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও বাদীনির ফুফু (রাজনা)’র অবৈধ প্রেমিক সাইদুর রহমান (৪৬), বাদীর চাচা সেবুল মিয়া (৩৫) ও ফুফু রাজনা বেগম হেলন (৩২)। বাদী তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, বাদীনিসহ তারা ৭ ভাই-বোন, মা-বাবা, চাচা-ফুফু, দাদা-দাদীসহ সবাই একই বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। ২০১৮ সালে বাদীনির মা মারা গেলে যাওয়ার পর ২০১৯ সালের প্রথম দিকে মামলার প্রধান অভিযুক্ত জিয়াছমিন বেগমের সাথে ২য় বারের মতো বিবাহ আবদ্ধ হন তার (বাদীনি) পিতা মুক্তার মিয়া। পিতার দ্বিতীয় বিয়ের পূর্ব থেকে বাদীনির ফুফু রাজনা বেগম হেলনের সাথে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সাইদুর রহমানের অবৈধ সম্পর্ক চলে আসছিলো। আর পিতার ২য় বিয়ের পর বাদীনির সৎ মা জিয়াছমিন বেগমের সাথে চাচা সেবুল মিয়ার অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠে। ওই ৪ জনের অবৈধ মিলামেশায় বাদীনি ও তার মৃত পিতা মুক্তার মিয়া দীর্ঘদিন ধরে বাঁধা-নিষেধ দিয়ে আসছিলেন। অবৈধ কাজে বাঁধা-নিষেধ দেওয়ার জের ধরে তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ নিরসনের জন্য একাধিক বার গ্রাম পঞ্চায়েতের সালিশ-বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব কারণে বাদীনি ও তার পিতার উপর অভিযুক্তরা চরম ক্ষিপ্ত ছিল। যার জের ধরে মাস খানের পূর্বে অভিযুক্ত সেবুল মিয়া বাদীনির পিতা মুক্তার মিয়াকে মারার জন্য দা হাতে নেয় ও প্রধান অভিযুক্ত জিয়াসমিন বেগম তার (মুক্তার) গলায় চাপ দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করার চেষ্ঠা করে। পরবর্তিতে এবিষয়টি নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সালিশ-বিচার অনুষ্ঠিত হয়। এরপর অভিযুক্ত চারজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে একে অপরের সহযোগীতায় নিজের অপকর্ম চালিয়ে যেতে থাকে। আর বাড়ির অভিভাবক হিসেবে মুক্তার আলীর এতে বাঁধা দিলে অভিযুক্তদের সাথে তার (মুক্তার) শত্রুতা সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ নভেম্বর রাতে অভিযুক্ত সেবুল-রাজনার বসত ঘরের সামনে অভিযুক্তরা সংঘবদ্ধভাবে জোরপূর্বক বাদীনির পিতা মুক্তার আলীকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে বিষ খাওয়ায়। যা বাদীনি নিজ চোখে দেখেছেন। বাদিনীর এগিয়ে যাওয়া দেখে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় মুক্তার আলীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ঘটনার ৫/৬দিন পূর্বে বাদীনি ও ১-২নং স্বাক্ষীকে বাদীনির পিতা ‘আমাকে তারা বাঁচতে দিবেনা। তারা যে কোন সময় আমাকে মেরে ফেলবে’ বলে ছিলেন বলে লিখিত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে মামলা সূত্রে জানা গেছে।এব্যাপারে মামলার অভিযুক্ত অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার সাইদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।