জুড়ীতে সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের আড়াই কোটি টাকার ভূ-সম্পত্তি রাজাকার কর্তৃক আত্মসাতের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে অসহায় সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা। জুড়ী অনলাইন প্রেসক্লাব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার সদর জায়ফরনগর ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামের মৃত উদয় রাম দাসের ছেলে সদয় দাশ (৫৫) তার লিখিত বক্তব্যে তুলে ধরেন। সদয় দাস তার লিখিত বক্তব্যে বলেন- আমি নিরীহ সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্য। পক্ষান্তরে স্থানীয় জাঙ্গীরাই গ্রামের মৃত গোলাম রেজার ছেলে মখসুদুর রহমান তোয়াক্কুল (৮০) একজন চিহিৃত রাজাকার, স্বাধীন বাংলার একজন পাক-বাহিনীর দালাল, যুদ্ধাপরাধী। রাজাকার মখসুদুর রহমার তোয়াক্কুল এর সহিত দীর্ঘদিন যাবত আমাদের ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। জুড়ী উপজেলার জাঙ্গীরাই মৌজার জে এল নং- ২৫, এস এ খতিয়ান নং- ৩১৭, দাগনং- ৫০১০ এ মৌরসী স্বত্ত্ব, জমির পরিমাণ ৪৪ শতক। উক্ত জায়গা দীর্ঘদিন যাবত রাজাকার তোয়াক্কুল জোরপূর্বক দখল করে জাল দলিল তৈরি করে আত্মসাতের হীন প্রচেষ্টায় লিপ্ত। রাজাকার তোয়াক্কুল আমার মৌরসী স্বত্ত্ব এ জমিটি বর্গা চাষের জন্য নেয়। আমি আমার পরিবারের পিতার একমাত্র সন্তান। আমাকে ছোট রেখেই আমার পিতা উদয় রাম দাশ পরলোক গমন করেন। বর্গা চাষের নামে জমিটি নিয়ে তোয়াক্কুল এ জমির ভূয়া জাল দলিলপত্র কাগজ বানিয়ে বর্তমানে সে উক্ত জমির মালিকানা দাবী করে আসছে। যখন আমি বুঝতে পারি বিগত সেটেলমেন্ট জরিপের সময় উক্ত জমিটি সে তার নিজ নামে রেকর্ডভূক্ত করায় তখন তাৎক্ষনিক ভাবে আমি এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজাকার তোয়াক্কুল আমাকে ও আমার পরিবারের কোন সদস্যদের এ বিষয়ে আর বাড়াবাড়ি না করার জন্য হুমকি দেয়। সংখ্যালঘু পরিবার হওয়ায় যুদ্ধপরাধী, ভূমি আত্মসাৎকারী মখসুদুর রহমান তোয়াক্কুল তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে আমার জমি দখলে নিয়ে পাল্টা আমার কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদেরও প্রাণে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। আমার মৌরসী স্বত্ত এই জমিটি উক্ত রাজাকার আত্মসাৎ করতে ভূয়া এক ব্যক্তিকে উক্ত জমির মালিক সাজিয়ে জালিয়াতি করে উল্লেখিত জমি খরিদ করে পরবর্তীতে তার নিজ পরিবারের সদস্যদেও মধ্যে একাধিকবার বিক্রি করে পুনঃ সে খরিদ করে বর্তমানে তার নিজ স্ত্রী রহিমা খাতুনের নামে বিয়ের কাবিননামার মোহরানার উপর এ জমিটি দানপত্র করে দেয়। এছাড়া ও ৫০১২ দাগে ৩০ শতক, ৫০১৫ দাগে ২৪শতক, ৫০১৬ দাগে ৩৯ শতক, ৫০৫৫ দাগে ০৭ শতক, ৫১৬১ দাগে ২১ শতক, ৫১৬২ দাগে ১৭ শতক ও ৫১৬৩ দাগে ১৯ শতক, উল্লেখিত একই খতিয়ান ভুক্ত জায়গার দাগের জমি সমূহ রাজাকার মকছুদুর রহমান তোয়াকুল এবং তার আশে পাশের ঘনিষ্টদের নিয়ে জোর পূর্বক ভাবে দখল করে রাখছে। একাত্তরের মহান স্বাধীনতার যুদ্ধে মৌলভীবাজার জেলার পিছকমিটির অন্যতম কমান্ডো সদস্য রাজাকার মখসুদুর রহমান তোয়াক্কুল জাল দলিল করে স্থানীয় এলাকার আব্দু মিয়ার ছেলে রাশেদ আলমের নিকট উল্লেখিত দাগের মধ্যে থেকে ২০ শতক জমি বিক্রি করে। বর্তমানে এ জমির দলিল জালিয়াতি প্রমাণ হওয়ায় রাশেদ আলম এ জায়গাটা অন্যত্র বিক্রি করতে চাইলে আমার আপত্তির প্রেক্ষিতে জমি বিক্রি করা থেকে বিরত রয়েছে। এ বিষয়ে জুড়ী উপজেলার প্রতিষ্ঠাকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রয়াত আলহাজ্ব এম, এ মুমিত আসুক উভয় পক্ষের মধ্যকার ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষে একাধিকবার বৈঠকের আয়োজন করলে ও বিবাদী রাজাকার মখসুদুর রহমান তোয়াক্কুল চেয়ারম্যানের ডাকে আসেনাই। অনিক প্লাজা বর্তমানে আধুনিক হাসপাতাল এর নিচে উল্লেখিত মৌজা ও দাগ খতিয়ান ভূক্ত মোট ৪৪ শতক জমি আমার পিতা আমাকে নাবালিক রেখে ৫৪ বছর পূর্বে মৃত্যু বরণ করেন। আমি নিরীহ অসহায় হিসেবে আপনাদের সাংবাদিকদের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দেশ রতœ, মমতাময়ী শেখ হাসিনা মহোদয়ের নিকট বিচার চাই।