ঝড়ে পড়া রোধ করতে সরকার শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যবই এবং উপবৃত্তির টাকা দিচ্ছেন। উপবৃত্তির টাকা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের মোবাইলে বিকাশ করে দেওয়া হচ্ছে। আগামীতে ঝড়ে পড়ার হার শুন্যের কোঠায় আনার লক্ষ্যে সরকার শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই এবং উপবৃত্তি ছাড়াও স্কুলড্রেস এবং ব্যাগসহ অন্যান্য উৎসাহমূলক শিক্ষা প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে নাটোরের গুরুদাসপুরে শিক্ষা ও স্বাক্ষরতার হার বেড়েছে নিঃসন্দেহে। সে তুলনায় বিদ্যালয়ে শিশু শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার হার রোধ করা যায়নি। ২০১৭ সালে তৃতীয় শ্রেনিতে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীরা ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত পিএসসি পরিক্ষা পর্যন্ত পৌঁছাতে ৩৬ শতাংশ শিশু ঝড়ে পড়েছে। বিশাল অংকের ঝড়েপড়া এসব শিশু উচ্চ শিক্ষা হতেও বঞ্চিত হচ্ছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য সেটাই প্রমান করে।
উপজেলা প্রাইমারী শিক্ষা অফিসের শিশু জরিপ ও ভর্তি রিপোর্টের তথ্যমতে, ২০১৭ সালে তৃতীয় শ্রেনিতে ভর্তিকৃত বালক শিশুর সংখ্যা ২ হাজার ৪৮০ জন ও বালিকা ২ হাজার ৩৯৩ জনসহ মোট ৪ হাজার ৮৭৩জন। ২০১৮ সালে চতুর্থ শ্রেনিতে উত্তীর্ন হয় ৪ হাজার ৭শ’ জন। যার এক বছরেই ঝড়ে পড়ে ১৭৩ জন। ২০১৯ সালে চতুর্থ শ্রেনি থেকে পঞ্চম শ্রেনিতে উত্তীর্ন হয়ে বালক ১ হাজার ৭৯৩ জন এবং বালিকা ১ হাজার ৯০৭ জনসহ মোট ৩ হাজার ৭শ’ জন ভর্তি হয়।
তথ্য বিশ্লেষনে দেখা যাচ্ছে, তৃতীয় শ্রেনি থেকে পঞ্চম শ্রেনিতে আসতে বালক ৬৮৭ জন এবং বালিকা ৪৯৩ জনসহ মোট ১ হাজার ১৭৩ জন শিশু ঝড়ে পড়েছে। সদ্যসমাপ্ত পিএসসি পরিক্ষায় বালক ১ হাজার ৪৪৫ জন ও বালিকা ১ হাজার ৭৫৫ জনসহ মোট ৩ হাজার ২শ’ জন নিবন্ধন করে। পরিক্ষায় অনুপস্থিত থাকে ৭১ জন। ২০১৭ সালে তৃতীয় শ্রেনিতে যেসব শিশু ভর্তি হয়েছিল ২০১৯ সালে পিএসসি সমাপনি পরিক্ষায় অংশগ্রহন করে সেই শিশুদের মধ্যে বালক ১ হাজার ৭৫ জন ও বালিকা ৬৬৯ জনসহ মোট ১ হাজার ৭৪৪ জন ঝড়ে পড়েছে। সর্বশেষ ঝড়ে পড়ার হার বালক ৪৩.৩৫ শতাংশ এবং বালিকা ২৮ শতাংশসহ মোট ৩৬ শতাংশ। এবারের এবতেদায়ী সমাপনী পরিক্ষায় নিবন্ধনকৃত বালক ২০৮জন এবং বালিকা ২২৯ জনসহ মোট ৪৭৩ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিল বালক ৪৩ জন এবং বালিকা ২৭ জনসহ মোট ৭০ জন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম রফিকুল ইসলাম বলেন, ঝড়ে পড়াদের সবাইকে ঝড়েপড়া বলা যাবেনা। এদের মধ্যে কিছু রিপিটার হয়, কিছু মদ্রাসায় ভর্তি হয়, কিছু সংসারের উপার্জনের কাজে সম্পৃক্ত হয়ে বিদ্যালয়েই আসেনা। বিশেষ করে বাল্যবিয়ের শিকার হয়ে শিক্ষার সমাপ্তি ঘটাতে বাধ্য হচ্ছে কন্যা শিশুরা। তবে মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের ঝড়ে পড়ার হার বেশি রয়েছে।