পাবনায় গৃহবধু আশা হত্যাকান্ডের ঘটনায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

ঘর করা হলো না আশার। কি অপরাধ করেছিল আশা? অনেক নির্যাতন শহ্য করেও কোলের কণ্যা শিশুকে নিয়ে এ পৃথিবীতে বাঁচতে চেয়েছিলো আর ১০জন মানুষের মত। কিন্তু পাষন্ড স্বামী তার পরিবারের সহযোগিতায় নির্মমভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে ফরিদপুর উপজেলার গোপাল নগর গ্রামে। ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামের গৃহবধু আশা হত্যাকান্ডের বিচার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে গোপালনগর গ্রামের কয়েক শত লোকজন রাস্তায় দাড়িয়ে এই কর্মসূচী পালন করে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ৪ বছর আগে পার্শ্ববর্তী গোলকাটা গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসী সফর আলীর সাথে বিয়ে হয় গোপালনগর গ্রামের আশা খাতুনের। সম্প্রতি শ্বশুর বাড়িতে থাকা অবস্থায় ননদের স্বামী সাইফুল ইসলামের সঙ্গে জা জাহানারা খাতুনের পরকীয়া সম্পর্কের বিষয়টি জেনে ফেলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৩ অক্টোবর পরিকল্পিত ভাবে আশা খাতুনকে মারপিট করে জোড়পূর্বক মুখে বিষ ঢেলে দেয় তারা। খবর পেয়ে আশার বাবার বাড়ির লোকজন ওই বাড়িতে গিয়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।
আশার পরিবারের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে উৎকোচের বিনিময়ে উল্টো আশার বাবার বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ দুটি মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরন করে। পরে জামিনে বের হয়ে গত ২৮ নভেম্বর (বৃহস্বপতিবার) আশার বাবা জাহিদুল ইসলাম বাবু বাদী হয়ে পাবনার আমলি আদালতে ৫জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ বিচারক মো. মুরাদ জাহান মামামলাটি গ্রহণ করে তা তদন্তের জন্য ফরিদপুর থানায় পাঠালেও পুলিশ মামলাটি আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ স্বজনদের।
আশা হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের জন্যে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও গ্রামবাসী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অনুরোধ করলেও কর্ণপাত করেন নাই।
বিক্ষুব্ধরা অবিলম্বে ফরিদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদের অপসারণ এবং আশা হত্যার বিচার দাবী করেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ফরিদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আশরাফুল কবীর, বনওয়ারী নগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা আজহার আলী সরকার, উপজেলা শ্রমিক লীগ সাধারণ সম্পাদক জনাব আলী সরকার, বনওয়ারী নগর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন, উপজেলা স্বেচ্ছাসবকলীগ সভাপতি শাহাদত হোসেন খান এবং সাধারণ সম্পাদক আকরামুল আলম খান প্রমুখ। এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনাটি অস্বীকার করে মন্তব্য করতে রাজি হননি।