সিলেটের বিশ্বনাথে তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ১০দিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামী হাবিব আলী মিঠু (২৬)’কে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের কোনাউড়া নোয়াগাঁও গ্রামের হাজী মনফর আলীর পুত্র। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) ভোরে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার লঙ্গলা রেওলয়ে স্টেশনের পার্শ্ববর্তি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ।বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী ও এসআই দেবাশীষ শর্ম্মার নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী হাবিব আলী মিঠু গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। মামলা দায়েরের পর থেকে সে পলাতক ছিল।উল্লেখ্য, হাবিব আলী মিঠুর বসতবাড়ির পার্শ্ববতি একটি বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের নওধার বৈরাগীরগাঁও গ্রামের একটি হত-দরিদ্র পরিবারের এক তরুণী। গৃহকর্মীর কাজ করাকালীন অবস্থায় প্রায় ৬মাস পূর্বে ওই তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয় মিঠুর। একপর্যায়ে তাদের দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং গত ১১ অক্টোবর দুপুরে তরুণীকে নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে নিয়ে যায় মিঠু। এরপর ১০দিন মিঠু তার নিজ বাড়ির পার্শ্ববর্তি একটি নির্জন ঘরে তরুণীকে আটকে রেখে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বকভাবে একাধিকবার ধর্ষণ করে। নিখোঁজের ঘটনায় তরুণীর পিতা বিশ্বনাথ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (ডায়েরী নং- ১০০০) করলে নিখোঁজের ১০দিন পর ভিকটিম তরুণীসহ অভিযুক্ত মিঠুকে নিয়ে থানায় উপস্থিত হন তার পরিবার। তখন তরুণীকে বিয়ে করতে রাজি হওয়ায় বিয়ে পড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে স্থানীয় মাতব্বররা থানা পুলিশের কাছ থেকে তাদেরকে তরুণীর বাড়িতে নিয়ে যান। কিন্ত পরবর্তীতে মাতব্বরা ধর্ষক মিঠুকে তার স্বজনের কাছে হস্তান্তর করেন এবং তরুণীর ইজ্জতের মূল্য হিসেবে তার অসহায় পরিবারকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রদানের প্রস্তাব দেন। কিন্ত তাতে তরুণীর পরিবার অসম্মতি জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মিঠুর পরিবারের পক্ষ থেকে তরুণীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। এবিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে টনক নড়ে প্রশাসনের। ফলে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা চালিয়ে ব্যার্থ হন মাতব্বররা। একপর্যায়ে গত ২৯ অক্টোবর রাতে হাবিব আলী মিঠুকে প্রধান আসামী করে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেন ভিকটিমের পিতা দায়েরকৃত মামলা (মামলা নং-২৩) রেকর্ড করা হয়। মামলায় মিঠুর পিতা হাজী মনফর আলী (৭০) ও বড় ভাই শানুর আলী (৪৫) এবং আরো ৩/৪ জনকেও অজ্ঞাতানা আসামী করা হয়। মামলার তদন্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত থানার এসআই নবী হোসেন বদলী হওয়ায় বর্তমানে তদন্তের দায়িত্বপান থানার এসআই দেবাশীষ শর্ম্মা। তিনি দায়িত্ব গ্রহনের এক দিনের মাথায় মামলার প্রধান আসামী মিঠুকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। মামলার অন্যান্য আসামীদেরকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন এসআই দেবাশীষ শর্ম্মা।