আশ্রয়নের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ এই স্লোগান নিয়ে এগিয়ে যাওয়া ‘জমি আছে ঘর নেই’ এমন দরিদ্র মানুষদের তালিকা তৈরি করে তাদের জমিতে সম্পূর্ণ সরকারি খরচে আধা পাকা ঘর ও একটি স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট নির্মান করে দেওয়ার প্রকল্পের এবার সুবিধাভোগী হলেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সদর ইউনিয়নের জানাইয়া মশলা গ্রামের দিনমজুর সিরাজ মিয়া। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর পেয়ে আপ্লুত তিনি। আজ শুক্রবার বিকেলে সরজমিনে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পাওয়া বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের জানাইয়া মশলা গ্রামের সিরাজ মিয়া বাড়িতে গিয়ে দেখা মেলে সিরাজ মিয়া ও তার বৃদ্ধা মা নূরজাহানের সঙ্গে। তারা কৃতজ্ঞার সঙ্গে বলেন, জীবনের শেষ সময়ে একটি পরিচ্ছন্ন পরিবেশে ঘর পেয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনেকটা শান্তিতে দিন কাটাচ্ছি। দীর্ঘ দিনের স্বপ্নছিল একটি সুন্দর ঘর করার কিন্তু অভাব অনটনের জন্য তা আর সম্ভব হয় নাই। আজ আমাদের সেই স্বপ্নের ঘর নির্মাণ করে স্বপ্ন পূরণ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন আমি মরেও শান্তি পাব।সিরাজ মিয়া বলেন, আমাদের গ্রামের তরুণ সমাজসেবক খলিলুর রহমানের সার্বিক সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বিনা খরচে ঘর পেয়েছি। ‘আগে আমি অনেক কষ্টে দিন কাটাইতাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমারে একটা ঘর কইরা দিছেন, একটা টয়লেট কইরা দিছেন, এখন আমার আর কোন কষ্ট নাই, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লাইগি দোয়া করি আল্লার যেন তারে সুস্থ রাহে (রাখে) আরো অনেক বছর বাচাইয়া রাহে (রাখে)। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নতুন ঘর পেয়ে পরিবারের সবাই খুশি। তারা এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তার দীর্ঘায়ু কামনা করেন।জানাগেছে, ‘বাংলাদেশে কোনো গৃহহীন মানুষ থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন অঙ্গীকারে ২০১৯ সালের মধ্যে সবার জন্য বাসস্থান নিশ্চিতকরণ কর্মসূচির আওতায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পরিচালিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যেগের মধ্যে অন্যতম প্রকল্প। যার জমি আছে, ঘর নেই তার নিজ জমিতে গৃহনির্মাণ প্রকল্পের বিশ্বনাথ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ৯৬টি হতদরিদ্র গৃহহীন পরিবার মাথা গোজার ঠাঁই পাচ্ছেন। উপজেলয় ইতি মধ্যে কয়েকটি পরিবার প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে বসবাস শুরু করেছেন। গৃহহীনদের বিনামূল্যে মেঝে পাকা সাড়ে ১৬ফিট দৈর্ঘ্য ও সাড়ে ১০ফিট প্রস্থের টিনশেড ভিট পাকা ৫ ফুটের বারান্দাসহ একটি করে ঘর করে দেয়া হচ্ছে। ঘরটিতে ১টি দরজা ও ৬টি জানালা রয়েছে। মোট ১৭টি আরসিসি খুঁটি দ্বারা খুব মজবুত করে তৈরি করা হচ্ছে ঘর। ঘরের সঙ্গে একটি স্যানিটারি লেট্রিন নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রতিটি ঘর ও স্যানিটারি লেট্রিন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ টাকা। সরকারের প্রদত্ত সুবিধা পাওয়া গৃহহীনদের মধ্যে বিনামূল্যে মাথা গুজার ঠাঁই একটি করে ঘর ও স্যানিটারি লেট্রিন পেয়ে একটু হলেও নিজেদের দীর্ঘদিনের কষ্টের গ্লানি মুছে ফেলেন গৃহহীনরা। তবে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কাউকে ঘরের চাবি হস্তান্তর না করলেও অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে বসবাস শুরু করছেন।এব্যাপারে জানাইয়া গ্রামের তরুণ সমাজসেবক খলিলুর রহমান বলেন, আমাদের গ্রামের সিরাজ মিয়া খুবই হত-দরিদ্র মানুষ। দিনমজুরের কাজ করে তার সংসার চলে। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বিনা খরচে ঘরে পেয়ে তার পরিবার খুশি। পরিবার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাহবুব আলম জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় বিশ্বনাথ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে মোট ৯৬টি দরিদ্র পরিবারকে তাদের নিজেদের জমিতে সরকারি খরচে আধা পাকা ঘর ও একটি স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট নির্মান করে দেয়া হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বর্নালী পাল বলেন, আশ্রয়ন-২ জমি আছে ঘর নেই প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর একটি বিশেষ প্রকল্প। আমরা এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিটি করে মাঠ পর্যায় থেকে যারা ঘর পাবার উপযুক্ত তাদের তালিকা করে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছি। গঠিত কমিটির মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন প্রকল্পের সকল কার্যক্রমের প্রতিটি পর্যায়ে সার্বক্ষনিক তদারকি করছে।উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকার, জনগনের সরকার এবং জনবান্ধব সরকার। দেশের দরিদ্র মানুষের সরকারি খরচে মাথাগোজার ঠাঁই করে দিয়ে তিনি আবারো প্রমান করলেন যে এই সরকার জনগনের কল্যানে প্রান্তিক পর্যায়েও কাজ করে যাচ্ছেন।