নাজিম হাসান,রাজশাহী থেকে:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফাইনান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে জোহা হলে ল্যাপটপ চুরির অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের টর্চার সেলে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে ও হাত ভেঙে দিয়েছে দুই ছাত্রলীগ নেতাকতর্মী। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সোহরাব হোসেনকে রাজশাহী মেডিকেলে কলেজে (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ড. শামসুজ্জোহা হলে শুক্রবার রাত ১ টার দিকে এই মারপিটের ঘটনা ঘটে। মারপিটের অভিযুক্তরা হলেন, হুমায়ুন কবির নাহিদ ও আসিফ লাক। তারা দুইজনই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারী এবং শামসুজ্জোহা হল শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্বরত নেতা। অপরদিকে ভুক্তভোগীও ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীসোহরাব হোসেনকে গুরুতর অবস্থায় তাকে (রামেক) হাসপাতালের ৮ নাম্বার ওয়ার্ডে ভর্তি করিয়েছে তার বন্ধুরা। প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগ নেতা আসিফ লাক ও নাহিদের নেতৃত্বে কয়েকজন মিলে সোহরাবসহ ফাইনান্স বিভাগের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীকে হল গেইট থেকে তৃতীয় ব্লকের ২৫৪ নাম্বার কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। এবং সেখানে অবরুদ্ধ করে বেধড়ক পিটাতে শুরু করে সোহরাবকে। মারধরের এক পর্যায়ে তার মাথা ফেটে যায়। এরপরও মারধর করা হয় তাকে। শেষে রড দিয়ে পিটিয়ে বাম হাত ভেঙে দেওয়া হয়। সোহরাবের সঙ্গে হাসপাতালে থাকা সহপাঠীরা জানান, আপাতত গুরুতর অবস্থায় সোহরাবকে রামেকে নিয়ে আসা হয়েছে। জরুরী অবস্থায় এক ব্যাগ রক্ত লেগেছে। অবস্থা কখন কি হয় বলা যাচ্ছে না। হাত ভেঙে গেছে। মাথায় সেলাই করতে হয়েছে এবং এক ব্যাগ রক্ত লেগেছে। ডাক্তার বলেছে মাথার ১৫ জায়গায় সেলাই করতে হবে। নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক সোহরাবের এক বন্ধু বলেন,গত দুইদিন ধরেই ল্যাপটপ চুরির ঘটনায় সোহরাবসহ আরও কয়েকজনকে রুমে ডেকে জেরা করে আসিফ ও নাাহিদ। কিন্তু তারা এর সাথে কোনো ধরণের সংশ্লিষ্ট না জেনেও নানা ধরণের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে। এক পর্যায়ে তারা চড়াও হয়ে সোহরাবকে রড দিয়ে মারধর করে। তিনি আরও বলেন, ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই তারা মারধর করেছে। কয়দিন আগেও হুমায়ুন কবির নাহিদ মটর সাইকেলের কাগজনিত কারণে পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা করে। এতে পুলিশেল কনস্টবলও তাকে মারধর করে। ছাত্রলীগের রাজনীতি করে বলে কাউকে মান্যও করে না। হলে আধিপত্য বজায় রাখতেই তারা এ ধরণের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানান তিনি।এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার বেলা ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা। পরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে। হল শাখা একাধিক নেতা জানান, বর্তমান কমিটির অনেক নেতা ক্যাম্পাসের বাইরে ও ভেতরে নিয়মিত মাদকদ্রব্য সেবন করেন। জানতে চাইলে রাবি প্রক্টর ড. লুৎফর রহমান বলেন,এতরাতে এই ঘটনায় আমরা শঙ্কিত। তবে কি কারনে এঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।