প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের প্রথম স্ত্রী কবি গুলতেকিন খান বিয়ে করেছেন। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রলায়ের অতিরিক্ত সচিব কবি আফতাব আহমেদের সঙ্গে সপ্তাহ দুয়েকে আগে আগে ঢাকায় ঘরোয়া পরিসরে গুলতেকিনের বাসায় তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর গুলতেকিন আমেরিকায় চলে গেছেন। দুই সপ্তাহ পর ফিরে বন্ধু-বান্ধব সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান করবেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষক হুমায়ূন যখন উপন্যাস লিখে নাম কুড়াতে শুরু করেছেন, সেই সময় তার সঙ্গে গুলতেকিনের বিয়ে। পরে টিভিনাটক নির্মাণে জড়িয়ে প্রয়াত লেখকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে অভিনেত্রী শাওনের। দূরত্ব তৈরি হয় হুমায়ুন-গুলতেকিনের। শাওনকে বিয়ে করার আগে গুলতেকিনের সঙ্গে দাম্পত্য জীবনের ইতি টানেন হুমায়ুন আহমেদ। তারপর সন্তানদের নিয়েই জীবন কাটছিল গুলতেকিনের। কখনো আমেরিকা কখনো ঢাকায়। নিয়মিত কবিতাও লিখছিলেন।
গত ৭/৮ বছর ধরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব কবি আফতাব আহমেদের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে গভীর সখ্যতা থেকে প্রেমে গড়ায়। নিয়মিত সন্তানদের নিয়েও আফতাব আহমেদের সঙ্গে তার সুন্দর সময় কাটতে থাকে। আফতাব আহমেদ তার ব্যারিস্টার স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটান ১০ বছর আগে। তার একমাত্র সন্তান লন্ডনে লেখাপড়া করছেন। গত ২৫ অক্টোবর গুলতেকিন তার ফেসবুক পেজে যৌথ ঘোষণা শিরোনামে ‘এবার বাতাস উঠুক তুফান ছুটুক’ স্ট্যাটাস দেন। এতে তার প্রিয়জনরা তাকে অভিনন্দিত করেন এবং তার ভালোবাসাময় জীবনের শুভ কামনা করে অসংখ্য মন্তব্য করেন।
এদিকে গত ৫ নভেম্বর আফতাব আহমেদ তার ফেসবুকে ইংরেজিতে যে স্ট্যাটাস দেন তার অর্থ হলো- ‘তিনি আমাকে তার সামনে বসালেন এবং আমার হাতে হাত রেখে বললেন’, ‘প্রত্যেকেরই মৃত্যুর স্বাদ পেতে হবে। কিন্তু আমি তোমাকে ছেড়ে যেতে চাই না। আমি নিঃশ্বাস নিতে চাই। তবে নিশ্চিত নই ভবিষ্যৎ কোন নিয়তিতে গাঁথা।’ আফতাব আহমেদ জবাবে বললেন, আমি চেষ্টা করব তোমাকে বাঁচাতে কিন্তু তোমাকে বিয়ে করা ছাড়া এটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’ এ সময় একটু বিরতি নিয়ে গুলতেকিন বললেন, তুমি কি আমাকে বিয়ে করবে? এবং আমি অনুমান করতে পারি, আমরা দুজনেই কোনো কারণ ছাড়া এক সঙ্গে হতে পারব না।
নিউইয়র্ক থেকে সূত্র জানায় তার পারিবারিক নিকট আত্মীয়াকে গুলতেকিন বলেছেন, আফতাব আহমেদ মনের দিক থেকে একজন সুন্দর মানুষ, তার মানবিক মন তাকে জয় করেছে।
১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের তরুণ শিক্ষক হুমায়ূন আহমেদকে কিশোরী গুলতেকিন প্রেমে পড়ে বিয়ে করেছিলেন। তাদের বিচ্ছেদ হয় ২০০৩ সালে। তাদের ঘরে এক পুত্রসহ তিন কন্যা সন্তান রয়েছেন। ২০১২ সালে হুমায়ূন আহমেদ তুমুল জনপ্রিয়তা নিয়ে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে ইন্তেকাল করেন। ২০০৫ সালে শাওনকে হুমায়ূন বিয়ে করলেও গুলতেকিন আর বিয়ে করেননি। গুলতেকিন খানের বয়স এখন ৫৬ বছর। নিয়মিত কবিতা লেখায় মনোযোগী।
গুলতেকিন এ পর্যন্ত ৫টি কাব্যগ্রন্থ লিখেছেনে।কাব্যগ্রন্থগুলো হলো চৌকাঠ, আজো কেউ হাঁটে অবিরাম, দূর দ্রাঘিমায়, মধুরেণ, বালি ঘড়ি উল্টে যেতে থাকে।