নাটোরের বড়াইগ্রামে কচুরিপানার বেডে বিষমুক্ত ভাসমান সবজি চাষে ঝুঁকছে কৃষক

নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের বড়াইগ্রামে কচুরিপানার বেডে ভাসমান সবজি চাষের দিকে ঝুঁকছে কৃষক। ফলে দিনে দিনে এর পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক সময়ের ক্ষতিকর কচুরি পানা এখন কৃষকের উপকারী সঙ্গী।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ভাসমান বেডে সবজি চাষ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার
বাটরা, বাঘাইট, মেরিগাছা, ধানাইদহ, তারানগর গ্রামে কচুরিপানা ব্যবহার করে বেড তৈরী করে
বিষমুক্ত সবজি চাষ করা হচ্ছে। চাষিদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, প্রনোদনা ও কারিগরি সহযোগিতা
প্রদান করছে কৃষি দপ্তর। এসকল ভাসমান বেডে লাল শাক, সবুজ শাক, ধনিয়া পাতা, পালং শাক,
গিমা কলমি, জাঙলায় লাউ ও শষার চাষ করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার সরেজমিন উপজেলার নগর ইউনিয়নের বাটরা গ্রামে গিয়ে দেখা যায় চাষী আব্দুল মজিদ
বাড়ির অদুরে বিলের মধ্যে কচুরিপানা দিয়ে আটটি বেড তৈরী করেছেন। সেখানে লাল শাক, গিমা
কলমি, লাউ ও শষার চাষ করেছেন। তার পাশে আব্দুল বারী নামে অপর এক কৃষকও একই ফসল
করেছেন।

চাষী আব্দুল মজিদ বলেন, ভাসমান বেডে সবজি চাষ খুবই লাভ জনক। বেডে প্রকৃতিক উপদানে
জৈবিক সক্ষমতা অনেক বেশি থাকে। কোন প্রকার সার ও কিটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। আবার যে জমিতে সবজির চাষ করা হয় এমনিতে জলাবদ্ধতা ও কচুরিপানার কারনে সেখানে কোন ফসল হতো না। এখন সেখানে ফসল উৎপাদন হচ্ছে।

চাষী আব্দুল বারী বলেন, চলতি বছর আমার এক বিঘা জমিতে ভাসমান বেড করে সবজি চাষ
করেছি। ইতিমধ্যে সবকল খরচ বাদে আমার প্রায় সোয়া লক্ষ টাকা আয় হয়েছে। যেটা অন্যকোন
বছর হয় নাই। আবার ডাঙ্গার জমিতে সবজি চাষ করেও পাই নাই।

তারানগর গ্রামের অপর চাষী খাদেমুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শে ভাসমান বেডে সবজি
চাষ শুরু করে প্রথম বছরেই লাভবান হয়েছি। আমার দেখে গ্রামের অনেক চাষী ইতিমধ্যে ভাসমান
বেড তৈরী করে সবজি চাষ শুরু করেছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার ইকবাল আহমেদ বলেন, ভাসমান বেডে সবজি চাষ একটি লাভজনক ফসল
আবার বিষ মুক্ত হওয়ায় স্বাস্থ্য ও জলবায়ুর জন্য উপকারী। যেসকল স্থানে সবজি চাষ হচ্ছে সেখানে
কচুরীপানা ও জলাবদ্ধতার করনে কৃষক কোন চাষ-বাস করতে পারতেন না। ভাসমান বেড তৈরীতে
কচুরী পানা ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে কচুরীপানা এক সময় পনে জৈব সারে পরিনত হচ্ছে। আবার
জলাবদ্ধতার কারনে ফসল উৎপাদনও ব্যহত হচ্ছে না।