রাজশাহীতে নিরাপদ ভবনের জন্য বিল্ডিং কোড করণীয় শীর্ষক সেমিনার

রাজশাহীতে আবাসান খাতে ঋণ সুবিধা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড ডেভলপার্স অ্যাসোসিয়েশন (রিডা)। মঙ্গলবার রিডার এক সেমিনারে এই দাবি জানানো হয়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজশাহী নগর ভবনের অ্যানেক্স সম্মেলন কক্ষে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। নিরাপদ ভবনের জন্য বিল্ডিং কোড ও আমাদের করণীয় শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে রিডা। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি বলেন, মহানগরীতে আবাসান খাত খুব সম্ভাবনাময়। তবে ভবন নির্মাণের আগে বিল্ডিং কোডসহ যাবতীয় নিয়ম মানতে হবে। এর পাশাপাশি ভবন নির্মাণের আগে পর্যাপ্ত রাস্তা চলাচলের জন্য রাখতে হবে। তবে শুধু ধনীদের জন্য নয়, মধ্যবিত্তরাও যেন ফ্ল্যাট কিনতে পারে তার জন্য শহরের বাইরে জমি দেখে ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিতে হবে। সেমিনারে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন রিডার সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) চেয়ারম্যান আনওয়ার হোসেন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম, রাজশাহী চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনি প্রমুখ। তারা বিল্ডিং কোড মেনে চলাসহ নিরাপদ ভবনের জন্য কী কী করণীয় সেই বিষয়গুলো তুলে ধরেন। এর পাশাপাশি আবাসিক খাতে ঋণ প্রাপ্তির অসুবিধার বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা করেন। তারা বলেন, নিরাপদ ভবন নগরবাসীর প্রত্যাশা। আর এই প্রত্যাশা পূরণের জন্য রিডা ও আরডিএ কাজ করছে। কিন্তু অন্য শহরের তুলনায় এখানে বড় বড় কোম্পানি কম বিনিয়োগ করছে। আবাসন খাতে যত অসুবিধা আছে তার মধ্যে অন্যকম একটি পর্যাপ্ত ঋণের সুবিধা না থাকা। আবাসান খাতে প্রথমে টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে পর্যাপ্ত ঋণ পেতে সমস্যা হয়। পর্যাপ্ত ঋণ সুবিধা পেলে কাজ করা সহজ হতো। এতে উন্নয়ন ত্বরাণি¦ত হতো। সেমিনারে রিডার ব্যবসায়ীরা বলেন, আবাসান খাতকে উন্নত করতে হলে এখানে যেমন বিনিয়োগ বাড়াতে হবে তেমনি নিয়ম মানতে হবে। বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণ করতে হবে। রিডার আওতায় ২২টি প্রতিষ্ঠান ডেভলপার হিসেবে কাজ করছে। এর বাইরে অনেকেই বেনামি ডেভলপার হিসেবে কাজ করছে। যারা ঠিকমতো নিয়ম মানছে না। তারা একদিকে যেমন বিল্ডিং কোড মানছে না অন্যদিকে ভবন নির্মাণের আগে মাটির পরীক্ষা করছে না। যে কোন ভবন নির্মাণের আগে মাটির পরীক্ষা করা জরুরী। কোন মাটিতে কোন ফাউন্ডেশনের ভবন নির্মাণ হবে এটা বুঝতে হবে। কিন্তু অনেক ডেভলপাররাই এটা করছে না। ফলে আবাসন খাত হুমকির মুখে পড়ছে। নগরীতে আবাসান খাতের সাফল্য তুলে ধরে বক্তরা বলেন, এ পর্যন্ত রাজশাহীতে রিড়ার পক্ষ থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। প্রায় চার হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়েছে। চার লাখ লোকের কর্মসংস্থান এখানে হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে রিডা রাজশাহীতে ৫০তলা ভবন নির্মাণ করতে চায়। আর ২০৩০-৪০ সালের মধ্যে দুবাইয়ের মতো দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণ করতে চায় তারা। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন রিডার সভাপতি তৌফিকুর রহমান লাভলু। সেমিনার শেষে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন রিডার পক্ষ থেকে বক্তাদের ত্রেæস্ট প্রদান করেন। রাজশাহী সিটি করপোরেশন এবং রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এই আয়োজনে সহযোগীতা করে।