সিলেটের বিশ্বনাথে লাউয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে। মাচায় মাচায় ঝুলছে লাউ আর লাউ। যেদিকে চোখ যায় কেবল লাউয়েরই ছড়াছড়ি। লাউয়ের ভাল ফলন দেখে এ জাতের লাউ চাষে অন্যান্য চাষিদেরও আগ্রহ বেড়েছে। অন্যদিকে স্বল্প জমিতে অধিকহারে লাউয়ের চাষ করতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন চাষিরাও। একেকজন চাষি ন্যুতম দুই হাজার টাকা ব্যয় করে ইতিমধ্যেই তিনগুণ আয় করেছেন। বিষমুক্ত আবাদের কারণে বাজারে এই লাউয়ের চাহিদাও ভাল। এসব লাউ চাষে কীটনাশক বা রাসায়নিক সার ব্যবহার না করলেও চাষিরা বেশি পরিমাণে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করছেন। তাতে লাউগুলো বিষমুক্ত থাকছে। আর ক্রেতাদের কাছে এ লাউ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর হাসনাজির গ্রামেরর কৃষক চনুফর আলী ৮ শতক জমিতে লাউয়ের চারা রোপণ করে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ না করেই লাউ চাষে সফলতা পেয়েছেন। তার এ সাফল্যে গ্রামের অন্য কৃষকরা রাসায়নিকমুক্ত লাউ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তারাও চনুফর আলীর মতো লাউ চাষ শুরু করে দিয়েছেন। গ্রামের বেশিরভাগ আবাদি এলাকায় এখন লাউসহ অন্যান্য সবজি চাষ করা হচ্ছে। কৃষক চনুফর আলী জানান, তিনি প্রায় ৮ শতক জমিতে প্রায় দুই হাজার টাকা ব্যয়ে লাউ চাষাবাদ করেন। এখও পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার টাকা লাউ বিক্রি করেছেন। আর প্রায় ২০-২৫ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি জানান।
একই জাতের লাউ চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন উপজেলার পুরানগাঁও কোনাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হামিদ। তিনি মাত্র ১২ শতক জমিতে লাউ চাষ করেছেন। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ১০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। আরও বহু টাকার লাউ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।উপজেলার কারিকোনা গ্রামের লাউ চাষি ওয়াব আলী বলেন, ‘লাউ চাষ তেমন একটা পরিশ্রমের নয়। ৫ শতক জমিতে প্রায় এক হাজার টাকা খরচ করে ১০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। তবে নিয়মিত গাছের পরিচর্যা করতে হবে। রোপণ করতে হবে উন্নতজাতের বীজ।’ প্রথমেই জমি তৈরির পর ভাল বীজ রোপণ করতে হবে। নিয়মিত দেখভাল করতে পারলেই লাউয়ের বাম্পার ফলন আশা করা সম্ভব। আর আমিও এ পদ্ধতি গ্রহণ করে চাষে সফল হয়েছি।’
পাইকারি বিক্রেতা আরশ আলী বলেন, ‘বিশ্বনাথের গ্রামের চাষকৃত লাউয়ে বিষ নেই। তাই ক্রেতারা এসব লাউ কিনতে গরিমসি করছেন না।ক্রেতা শামীম মিয়া, মনির মিয়া জানালেন, বিষ নেই বলেই বাজারে গিয়ে গ্রামের লাউ খুঁজে বেড়াই। এ লাউয়ের স্বাদ-ঘ্রাণও ভাল।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার রমজান আলী বলেন, এবার আগাম জাতের লাউ চাষ করে বেশিরভাগ কৃষক সফলতা পাচ্ছেন। অনেক কৃষক লাউ চাষে কৃষি অফিস থেকে পরার্মশ দেয়া হয়।