২১ দিনে বরিশালে ১২শ জেলের কারাদণ্ড

বরিশাল: ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে প্রজনন মৌসুমের সঙ্গে সমন্বয় করে এবার চলতি বছরের ৯ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরা, বেচা-কেনা, পরিবহন, বিপণন ও বাজারজাতকরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মৎস্য বিভাগ।

ওই হিসেবে অনুযায়ী বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাত ১২টায় উঠে যাচ্ছে ইলিশের প্রজনন মৌসুমের এ নিষেধাজ্ঞা। তবে, নিষেধাজ্ঞা শুরুর সময় গত ৯ অক্টোবর থেকে বরিশাল বিভাগের সর্বোত্র চলছে মৎস বিভাগের নেতৃত্বে অভিযান। যে অভিযানে জেলা-উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌ-বাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনী সহায়তা করছে।

মৎস অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর সকাল পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় মোট ধারাবাহিকভাবে দু’হাজার ৪৩০টি অভিযান, এক হাজার ২০টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত ও মোট অভিযানের অনুকূলে এক হাজার ৫৪১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া অভিযানে আটকদের কাছ থেকে এ পর্যন্ত ৩৭ লাখ ৩৩ হাজার ৭শ টাকা জরিমানা ও এক হাজার ২২৯ জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ৮৫ লাখ ৭৮ হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল ও ১৭ দশমিক ৬৯ মেট্রিক টন ইলিশ উদ্ধার করা হয়েছে।

জেলা মৎস্য কার্যালয়ের কর্মকর্তা (হিলসা) বিমল চন্দ্র দাস বাংলানিউজকে বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় ইলিশের উপর নির্ভরশীল জেলেদের ২০ কেজি করে চাল খাদ্য দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে প্রচার-প্রচারণা নিয়ে টানা অভিযান চালানো হয়েছে। আর বিভিন্ন অভিযানে বরিশালে যারা আটক হয়েছেন, তাদের মধ্যে অধিকাংশই মৌসুমি জেলে।

আর মৎস্য অধিদপ্তর বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আজিজুল হক বলেন, এখন পর্যন্ত অভিযানের ফলাফলে যে টুকু বোঝা যাচ্ছে, তাতে বিগত সময়ের থেকে নদী ও সাগর নিষেধাজ্ঞার সময় প্রশাসনের সর্বোস্তরের নজরদারি বেড়েছে। ফলে বিগত সময়ের থেকে অভিযান, জেলেদের আটক, জাল উদ্ধারের পরিমান বেড়েছে।

তিনি আরও বলেন, অভিযানকালীন বিভিন্ন স্থানে ঘুরে যেটুকু বোঝা গেছে, তাতে নদীতে ইলিশের আধিক্য রয়েছে। আগামীকাল থেকেই এর প্রভাব বাজারে দেখা যাবে। তবে, বাজারে ডিমওয়ালা ইলিশ পাওয়া গেলেও শঙ্কার কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছেন মৎস কর্মকর্তারা।

কারণ ২২ দিনে যে পরিমান ইলিশ ডিম ছেড়েছে তারপরে জাটকা সংরক্ষণ সঠিকভাবে করলে দেশে ইলিশের ঘাটতি থাকবে না বলেও দাবি তাদের।

বরিশাল জেলায় ৪৩ হাজার ৬৪৪ জন জেলেকে এবং বিভাগে ২ লাখ ২৭ হাজার ৯৪৩ জন জেলেকে নিষেধাজ্ঞার এ সময়ে ২০ কেজি করে চাল সহায়তা দেওয়ার কথা। যাদের মধ্যে বেশিরভাগ জেলেই সহায়তার এ চাল পেয়েছেন।