যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাদের নিয়মিত ওষুধ খাওয়াটা জরুরি। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে সেই ওষুধ খেতে হয়। কিন্তু এবার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন ঠিক কখন উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খেলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যাবে। গবেষকদের দাবি, ঘুমাতে যাওয়ার আগে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খেলে তা সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হয়। ইউরোপীq হার্ট জার্নালে বলা হচ্ছে, এটি একটি সহজ টিপস যা কি না জীবন বাঁচাতে পারে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, সকালের পরিবর্তে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ যদি রাতে ঘুমাতে যাবার আগে খাওয়া হয় তবে তা হার্টঅ্যাটাক বা স্ট্রোক থেকে বেশি সুরক্ষা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আমাদের দেহঘড়ি এবং প্রাকৃতিক যে ২৪ ঘণ্টার ছন্দ, সেটি আমাদের ওষুধ গ্রহণের প্রতিক্রিয়ায় প্রভাব ফেলে। এ কারণে দেহঘড়ির সঙ্গে মানিয়ে নিয়মিত ওষুধ খাওয়া উচিত। দিনের কোনো একটি নির্দিষ্ট সময়ে হার্টের ওষুধসহ বেশ কিছু ওষুধ খেলে তা ভালো কাজ করে।
সর্বশেষ ১৯ হাজার মানুষের ওপর উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ নিয়ে গবেষণা করা হয়। কোনো নির্দিষ্ট সময়ে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খেলে তা কেমন প্রভাব ফেলে সেটি যাচাই করতে গিয়েই বিজ্ঞানীরা এই রহস্য উন্মোচন করেছেন। সেখানে তারা দেখতে পেয়েছেন রাতে ঘুমানোর আগে একটি নির্দিষ্ট সময়ে ওষুধ খেলে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হয়।
স্প্যানিশ ঐ গবেষণায় রোগীদের দুটি দলে ভাগ করা হয়। একদল ওষুধ গ্রহণ করত সকালে, অপর দল রাতে ঘুমানোর আগে। এই দুই দলের ওপর ওষুধের ভূমিকা কেমন ছিল তা পর্যবেক্ষণ করা হয়। মূলত ওষুধ গ্রহণের পরবর্তী পাঁচ মিনিটের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করেন গবেষকরা। এই পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, যারা রাতেরবেলা ঘুমানোর আগে ওষুধ খেয়েছে তাদের মৃত্যু বা হার্টঅ্যাটাকের ঝুঁকি অন্যদের চেয়ে অর্ধেকে নেমে এসেছে।
রাতেরবেলায় রক্তচাপ কমে যায়, কারণ তখন আমরা বিশ্রাম নেই বা ঘুমাই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি যদি না হয়, রক্তচাপ যদি সব সময়ই বেশি থাকে তবে হার্টঅ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। যেসব রোগী ঘুমাবার আগে হাইপারটেনশনের ওষুধ খাচ্ছেন তাদের রক্তচাপ দিনে ও রাতে উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পায়। চিকিৎসকরাও রোগীদের ঘুমানোর আগে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। গবেষণার শীর্ষ গবেষক ভিগো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর রেমন হার্মিদা বলেছেন, চিকিৎসকরা রোগীদের এসব কিছু বিবেচনা করেই ওষুধ গ্রহণে পরামর্শ দিতে পারেন। তিনি বলেন, এটি যেমন চিকিৎসার পেছনে বাড়তি ব্যয় হ্রাস করতে পারে সেই সঙ্গে বহু প্রাণও বাঁচাতে পারে।-বিবিসি