নাটোর প্রতিনিধি- মানসিক ভারসাম্যহীন বাবাকে ১০ বছর শিকল বন্দি করে টয়লেটে রেখেছিল একমাত্র ছেলে ও তার পরিবার। অবশেষে শিকল বন্দীকে বাবাকে উদ্ধার করলো নাটোরের গুরুদাসপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার তমাল হোসেন। ঘটনাটি ঘটেছে ,নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের চন্দ্রপুর ওয়াবদা বাজারে। শিকল বন্দী আমির ওয়াবদা বাজারের আমির আলী সুপার মার্কেটের মালিক। শিকল বন্দী আমিরের এক ছেলে দুই মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে সংসার।বুধবার রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিকল বন্দী আমির আলীকে উদ্ধার করে শিকল ভেঙ্গে তার বাড়িতেই ভাল একটি ঘরে তাকে বাসস্থানের সুযোগ করে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তমাল হোসেন।
আমির আলির ভাগ্নে রহিম জানান, দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ তার মামা আমির আলি কে কোন চিকিৎসা না করিয়েই নোংরা এবং স্যাতসেতে জায়গায় বন্দি করে রেখেছিলো তার ছেলে মেয়েরা এবং স্ত্রী।
শিকল বন্দি আমির আলীর ছেলে মঞ্জু আলী এবং স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, আমির আলী ভারসাম্যহীন হওয়ায় তাকে এমন ভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে। ১৪ বছর আগে তাকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছিলো। তারপর আর কোন চিকিৎসা করা হয়নি। আমির আলীকে নোরা ও অপরিচ্্ছন্ন জায়গায় বন্দী রাখার ব্যাপারে পরিবারের লোকজন ভূল শিকার করেছেন। পরবর্তীতে আর তাকে এমন ভাবে রাখা হবেনা বলে ইউএনও ও এলাকাবাসীর কাছে প্রতিজ্ঞা করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তমাল হোসেন জানায়, দীর্ঘ ১০ বছর আমির আলীকে তার পরিবারের লোকজন একটি অস্বাস্থকর কুড়ে ঘরে তাকে শিকল বন্দী করে রেখেছিলো। সেই ঘরে বৃষ্টি হলেই হাটু পানি জমতো। শুধু তাই নয় যে ঘরে আমির আলী কে বন্দী করে রাখা হয়েছিলো, সেই ঘরেই তার শোয়ার জায়গা এবং টয়লেট স্থাপন করা হয়েছিলো। যে পাত্র দিয়ে টয়লেটের কাজ সারতো,সেই পাত্র দিয়েই তাকে আবার পানি পান করতে হতো। ভাঙ্গা কুড়ে ঘরে টয়লেট, গোসল, খাবারসহ পোকা মাকড়ের কামড় খেয়েই কাটিয়েছে ১০ বছর। আমির আলির ঘটনা বুধবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকর্মীল নাজমুল হাসান নাহিদ ইউএনও কে জানালে তৎখনাত ঘটনাস্থলে গিয়ে আমির আলীকে উদ্ধার করে তার বাড়িতেই ভাল একটি ঘরে তার থাকার জায়গা করে দেওয়া হয়। এবং পরবর্তীতে এই রকম অমানবিক কাজ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।