মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার ঃ মৌলভীবাজার কমলগঞ্জ উপজেলার ২ নং পতনঊষার ইউনিয়নের বৃন্দাবনপুর মৌজার বৈরাগীচক চৌধুরী বাড়ীতে অবস্থিত কলেজটির অবস্থান। কলেজটির প্রষ্টিাতা অধ্যক্ষ ফখর উদ্দিন চৌধুরী ও দাতা সদস্য তার সহধর্মীনী ফারহানা চৌধুরী নাজনীন। নাম হুরুন্নেছা খাতুন চৌধুরী কলেজ। প্রতিবছরই ভালো ফলাফলে উপজেলা জুড়ে সুনাম আর সুখ্যাতি। কলেজটিতে যেতে চোখে পড়ে আঁকাবাঁকা মেঠোপথ। মাঠের পর মাঠ। ধান ক্ষেত আর সবুজ দুনিয়া । এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে জ্ঞান- বিজ্ঞানেও পারদর্শী হওয়া চাই। সে জন্য হতে হবে শিক্ষিত। ছেলে সন্তানদের স্কুল-কলেজে পাঠাতে হবে। সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ওদের সে রকম করে তৈরিও করতে হবে। দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তারা পড়ালেখায় উচ্চ শিক্ষা না নিলেও সন্তানদের এমন প্রয়োজনীয়তা খুব ভালো করে বুঝেন। অনুধাবনও করেন। কিন্তু মফস্বলের এই গ্রাম ওই গ্রাম। তাদের এলাকার কোনো গ্রামেই নেই উচ্চ শিক্ষা অর্জনের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যা আছে তা শহরে। কিন্তু শহরের ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২৫-৩০ কিলোমিটার যাতায়াত আর পড়ালেখার খরচ কুলিয়ে ওদের গন্তব্যে পৌঁছানোর সাধ্য কোথায়? জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিজ এলাকায় নিজস্ব অর্থায়নে এই অবস্থার পরিবর্তন করতে আগ্রহী হন ওই এলাকারই সু-সন্তান যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিশিষ্ট সমাজ সেবক শিক্ষানুরাগী অধ্যক্ষ ফখর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী তিনি নিজ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেন। এলাকার সন্তানদের উচ্চ শিক্ষা অর্জনের সুযোগ করে দিতে উদ্যোগী হন। নিজ ইউনিয়নের বৃন্দাবন পুর বৈরাগীর চর, পালিত কোনা, নিজ বৃন্দাবন পুর, কান্দিগাও, নোয়াগাও, রাধা গোবিন্দপুর, গোপিনগর, রসুলপুর এসব এলাকার ছেলে -মেয়েরা এসএসসি পাশ করে যাতে কষ্ট করতে না হয় তা চিন্তা করে অধ্যক্ষ ফখর উদ্দিন চৌধুরীর অর্থায়নে ২০১১ সালের ২১ শে জানুয়ারী কলেজটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইলিযাছুর রহমান চৌধুরী । বিগত ২০১৬ সালের ৮ ই আগষ্ট কলেজটির শুভ উদ্বোধন করেন প্রতিষ্টাতার চাচী জাহানারা বেগম চৌধুরী। ১৭ মে ২০১৫ ইং সনে বিশাল আনুষটানিকতার মধ্যদিয়ে কলেজটির যাত্রা শুরু হয় ও নৃপেন্দ্র কুমার দাসের সভাপতিত্বে কলেজ পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত সভায় নৃপেন্দ্র কুমার দাস কে সভাপতি ও প্রমোদ দেবনাথকে সাধারন সম্পাদক করে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। তখনকার গর্ভনিং বডির প্রতিষ্টাকালীন সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম আহমদ চৌধুরী, সেক্রেটারী ও অধ্যক্ষ ফখর উদ্দিন চৌধুরী, দাতা সদস্য ফারহানা চৌধুরী ও অন্যান্য সদস্যরা হলেন, সহ-সভাপতি আব্দুল হক চৌধুরী, নৃপেন্দ্র কুমার দাস, সদস্য প্রমোদ চন্দ্র দেবনাথ,আব্দুল আহাদ,আব্দুর রহিম মাষ্টার,জুনেদ আহমদ, জুবের আহমদ চৌধুরী, সামছুজ্জামান চৌধুরী রাহেল। গর্ভনিং বডির বর্তমান সভাপতি অধ্যক্ষ ফখর উদ্দিন চৌধুরী, দাতা সদস্য ফারহানা চৌধুরী নাজনীন, সেক্রেটারী অধক্ষ মো: নুরুল ইসলাম, সদস্য নৃপেন্দ্র কুমার দাস, আব্দুর রহিম মাষ্টার। কলেজটিতে বর্তমানে শিক্ষকসহ যারা কর্মরত রয়েছেন, অধ্যক্ষ মো: নুরুল ইসলাম, প্রভাষক বয়তুল হক চৌধুরী, মো: নজরুল ইসলাম, সাজনা বেগম,নাসরিন চৌধুরী, সালমা বেগম, সেলিনা বেগম, মো: জুয়েল আহমদ, ইঞ্জিনিয়ার আরজান আলী, অফিস সহকারী মলয় দেবনাথ, নাইট গার্ড বুধু মিয়া সহ অন্যান্যরা। কলেজটির যাবতীয় ব্যয় অধ্যক্ষ ফখর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী তিনি নিজেই বহন করেন। প্রায় কোটি টাকা ব্যয় করে আধুনিক মানসম্মত শিক্ষার দৃঢ় প্রত্যয়ে মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠেছে হুরুন্নেছা খাতুন চৌধুরী কলেজ । শুরুতেই গুরুত্ব দেওয়া হয় নিয়ম শৃঙ্খলা ও পড়াশোনা দিকে। সাফল্যও এসেছে। ২০১৯ সনের এইচএসসি পরিক্ষায় পাশের হার ছিল ৮৮.২৪%। ফখর উদ্দিন চৌধুরীর ঐকান্তিক ইচ্ছা আর স্থানীয় মানুষের প্রয়োজন ও আগ্রহকে বিবেচনায় নিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে কলেজ প্রতিষ্ঠা সম্পন্ন হয়। ২০১৬ সালে বৈরাগীচর এলাকায় তাঁর মরহুমের মাতার নামে প্রতিষ্ঠা করেন হুরুন্নেছা খাতুন চৌধুরী কলেজ। হুরুন্নেছা খাতুন চৌধুরী কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, ফখর উদ্দিন চৌধুরী অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত হুরুন্নেছা খাতুন চৌধুরী কলেজ পর্যাপ্ত ভূমি, যুৎসই ভৌত অবকাঠামো, যুগোপযোগী পাঠদান ব্যবস্থা, শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ, ছাত্র-শিক্ষক সংখ্যাসহ প্রয়োজনীয় সকল যোগ্যতাই রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।