যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া অবৈধ ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার পর সংগঠনের কার্যালয়ে হাজারখানেক নেতাকর্মী নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট।
বুধবার দিনগত রাত দুইটা দিকে কাকরাইলে যুবলীগের ওই কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় ভেতর-বাইরে হাজারের বেশি নেতাকর্মী রয়েছেন। তারা সম্রাটের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগানও দেন।
গভীর রাতে কার্যালয়ে অবস্থানে কারণ জানতে চাইলে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট বলেন, র্যাব খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার পর নেতাকর্মীরা সবাই অফিসে ছুটে এসেছে। তারা এখানেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দুপুরের পর গুলশান ২ নম্বরের ৫৯ নম্বর সড়কে খালেদের বাসা এবং ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবে একযোগে অভিযান শুরু করেন র্যাব সদস্যরা।ওই ক্লাবে পাওয়া যায় মদ আর জুয়ার বিপুল আয়োজন। সেখান থেকে ২৪ লাখ টাকাও উদ্ধার করা হয়। ১৪২ জনকে গ্রেপ্তার করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।
অপরদিকে সন্ধ্যায় গুলশানের বাসা থেকে খালেদ ভূঁইয়াকে নিয়ে যায় র্যাব। ওই বাসায় একটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়ার কথা জানিয়েছেন র্যাব কর্মকর্তারা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় যুবলীগ নেতাদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের পর আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনটির প্রভাবশালী নেতা খালেদকে ধরা হল। শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন প্রকল্পে চাঁদাদাবির অভিযোগে সমালোচনার মুখে থাকা রেজাওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী যুবলীগের কয়েকজন নেতাকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা ‘শোভন-রাব্বানীর চেয়েও খারাপ’ বলে মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবলীগের ঢাকা মহানগরের একজন নেতা যা ইচ্ছে করে বেড়াচ্ছে, চাঁদাবাজি করছে। আরেকজন এখন দিনের বেলায় প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে চলেন। সদলবলে অস্ত্র নিয়ে ঘোরেন। এসব বন্ধ করতে হবে। যারা অস্ত্রবাজি করেন, যারা ক্যাডার পোষেন, তারা সাবধান হয়ে যান, এসব বন্ধ করুন। তা না হলে, যেভাবে জঙ্গি দমন করা হয়েছে, একইভাবে তাদেরকেও দমন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য অনুযায়ী যুবলীগের বিতর্কিত নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।