গত কয়েকদিন ধরে পেঁয়াজের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে ৪৫ টাকার পেঁয়াজ ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বাজারে। সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ৩০ টাকা বেড়েছে। এক মাস আগে পেঁয়াজের দাম ছিল ২৫-৩০ টাকা।ভারতে টন প্রতি পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য দ্বিগুন হওয়ার খবরে এদেশের ব্যবসায়ীরা পেয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বাজারে আসার আগেই দাম বাড়ানোয় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। সেই সাথে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমানোর অভিযোগও করেছেন কেউ কেউ।
ভারতের কৃষিপণ্য মূল্য নির্ধারণকারী সংস্থা-ন্যাপেড হঠাৎ করেই শুক্রবার থেকে পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য ৩শ’ ডলার থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৮শ’ ডলার করে। শুক্র ও শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। অথচ এরই মধ্যে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা। নতুন আমদানি করা পেঁয়াজ আসার আগেই বাজারে বিদ্যমান পেঁয়াজের দাম কেন বাড়ল তার কোন সদুত্তর নেই ব্যবসায়ীদের কাছে।
ইতোমধ্যে পেঁয়াজ আমদানির জন্য খোলা এলসিগুলো সংশোধন করে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) থেকে নতুন দরে আমদানি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।
ভারতীয় পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য বাড়ার খবরের সুযোগে দেশিয় পেঁয়াজের দাম সমপর্যায়ে বাড়িয়েছেন দেশের ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর অন্যতম বাজার ঘুরে দেখা যায় দেশি পেয়াজের দামও কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, আড়তদাররা বাজারে দেশি পেঁয়াজের আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। তাই দাম বেড়েছে।
বেনাপোলের বড় বাজারের মিম বাণিজ্য ভান্ডারের আড়তদার মুসলিম উদ্দিন জানান, ভারত তাদের পেঁয়াজের রপ্তানিমূল্য বৃদ্ধি করার কারণে বাজারে পেঁয়াজের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। আমরা কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের শৈলকুপা থেকে পেঁয়াজ এনে পাইকারি বিক্রি করি। যে দামে কিনি তার থেকে সামান্য লাভে বিক্রি করি। আর খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি হয়।
তিনি বলেন, যে পরিমাণ পেঁয়াজ মজুত আছে আগামী এক মাসেও সংকট হবে না কিন্তু ভারতে রপ্তানি মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়ার পরই আমাদের দেশে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে হু হু করে। বর্তমানে অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার।
যশোর বড় বাজার সূত্রে জানা গেছে, আলুপট্টি ও কালীবাড়িতে ১৩ টি পেঁয়াজের আড়ত রয়েছে। এসব আড়ত থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫০ বস্তা করে পেঁয়াজ বিক্রি হয়। খুচরা বিক্রেতারা আড়ত থেকে এসব পেঁয়াজ কিনে থাকেন। যশোরে দেশি পেঁয়াজ আসে ঝিনাইদহ, ফরিদপুর ও কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন মোকাম থেকে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ আসে বেনাপোল ও ভোমরা বন্দর দিয়ে। এছাড়া কোনো কোনো ব্যবসায়ী অন্যান্য মোকাম থেকেও পেঁয়াজ সংগ্রহ করেন।
খুচরা ব্যবসায়ী মো. শুকুর আলী জানান, রোববার পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকার স্থলে ৫৫ টাকা কেজি দরে। আর সোমবার বিক্রি হয়েছে ৬৮ টাকা দরে। খুচরা বিক্রি করা হয় ৭২-৭৫ টাকা করে। তিনি জানান, নতুন পেঁয়াজ ওঠা পর্যন্ত দাম ৮০ টাকায় গিয়ে ঠেকতে পারে।