বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ডাইরিতে লিখেছিলেন, ‘‘ভারতের উচিত ছিল গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মীরের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার মেনে নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একটা স্থায়ী শান্তিচুক্তি করে নেওয়া।তখন পাকিস্তান ও ভারত সামরিক খাতে ব্যয় না করে দুই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ব্যয় করতে পারত।দুই দেশের জনগণও উপকৃত হত। ভারত যখন নিজদের গণতন্ত্রের পূজারী মনে করে তখন কাশ্মীরের জনগণের মতামত নিতে আপত্তি কেন করছে? এতে একদিন দুটিই দেশ এক ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হতে বাধ্য হবে।’’ সূত্র: কারাগারের রোজনামচা, পৃষ্ঠা: ১৫৯।
আজ থেকে ৫৩ বছর আগে ১৯৬৬ সালের ১৩ জুলাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাইরিতে লিখে রাখা মন্তব্য। আজ ঠিক সেই সংকটের পথেই ভারত ও পাকিস্তান।
অপরদিকে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা এবং স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু বলেছিলেন, ‘‘কাশ্মীর ইন্ডিয়া কিংবা পকিস্তান কারোই সম্পত্তি নয়। কাশ্মীরী জনগণই এর মালিক। কাশ্মির যখন ইন্ডিয়ার সাথে যোগদান করে, তখন আমরা অঞ্চলটির নেতাদের কাছে পরিস্কার করে বলেছিলাম, আমরা তাদের জনগণের রায় শেষ পর্যন্ত মেনে চলবো। যদি তারা আমাদের বের হয়ে যেতে বলে, কাশ্মীর ত্যাগ করতে আমার কোনো দ্বিধা থাকবে না। আমার এই বিষয়টি জাতিসংঘে উত্থাপন করেছি। সেখানে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। একটা মহান জাতি হিসেবে আমরা এই প্রতিশ্রুতি থেকে সরে যেতে পারি না। কাশ্মীরের জনগণের উপরই আমার চূড়ান্ত সমাধানের ভার ছেড়ে দিয়েছি। আমরা তাদের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ।‘’ সূত্র: অমৃত বাজার পত্রিকা, কলকাতা, ২ জানুয়ারি ১৯৫২।
জওহরলাল নেহেরু ছিলেন কাশ্মীরের স্বাধীনতার পক্ষে। তিনি সেখানকার জনগণের দাবিকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিতেন বলেই এসব কথা বলেছিলেন।
এদিকে এতো বছর পর ভারতের সংবিধানে কাশ্মীরকে যে বিশেষ স্বায়ত্বশাসিত এলাকার মর্যাদা দিয়েছিল ৩৭০ ধারা – তা বাতিল করেছে ক্ষমতাসীন বিজেপি। এর ফলে আলাদা সংবিধান ও পতাকাসহ যে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল তা থেকে কাশ্মীরীরা বঞ্চিত হচ্ছে।