ইয়ানূর রহমান : মিথ্যা ঘোষণায় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা ১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা মূল্যের আড়াই মেট্রিক টন (২৫০০ কেজি) পাউডার জাতীয় ভায়াগ্রার একটি চালান আটক করেছে বেনাপোল কাস্টমস সদস্যরা।
বুধবার বেলা ১২টায় ভায়াগ্রা আটকের বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনে কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী নিশ্চিত করেন।
এর আগে, গত ২৬ মে বেনাপোল বন্দর থেকে সন্দেহমূলক পাউডার জাতীয় ভায়াগ্রার চালানটি জব্দ করে কাস্টমস সদস্যরা।
অভিযুক্ত আমদানিকারক হলো- ঢাকার মিটফোর্ড রোডের ৪৭/সি এলাকার মেসার্স বায়েজিদ এন্টারপ্রাইজ। রপ্তানিকারক ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আ বি ট্রেডার্স । অবৈধ আমদানিতে সহযোগী ছিলো সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান বেনাপোলের সাইনী শিপিং সার্ভিসেস।
সংবাদ সম্মেলনে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী বলেন, একটি অসাধু ব্যবসায়ী চক্র অবাধে ভারত থেকে আমদানি যোগ্য পণ্যের আড়ালে ভায়াগ্রা নিয়ে যাচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাস্টমস সদস্যরা ওই আমদানিকারকে নজরদারিতে রাখে।
পরে ওই আমদানি কারক আমদানি যোগ্য পণ্যের আড়ালে সোডিয়াম স্টার্চ গ্লাইকোলেট ঘোষণা দিয়ে ভায়াগ্রা পাউডারের একটি পণ্য চালান আমদানি করে ছাড় নেওয়ার সময় পরীক্ষণ করে চালানটি জব্দ করা হয়।
বেনাপোল কাস্টমস ল্যাব, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর, বিসিএসআইআর, বুয়েট ও কুয়েটে পণ্যের নমুনা পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যায় আমদানিকৃত পাউডারটি ভায়াগ্রা। যার আনুমানিক মূল্য সাড়ে ১২ কোটি টাকা।
কাস্টমস কমিশনার আরও জানান, এটি দেশে এ যাবৎ কালের আটকের মধ্যে সর্ববৃহৎ মাদকের চালান। মাদক দ্রব্যের চালানটি আটক করায় তাকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি-ধামকিও দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানাবেন বলেও জানান।
তিনি জানান, এ অপরাধের জন্য ইতোমধ্যে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সাইনী শিপিং সার্ভিসেস এর লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করা হয়েছে। সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। জালিয়াতি ও অবৈধ পণ্য সুকৌশলে আমদানি অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনের পর দোষীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৩ এপ্রিল বেনাপোল বন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় পাচারের সময় ২০০ কেজি ভায়াগ্রার চালান আটক করে কাস্টমস সদস্যরা। এ চালানের অভিযুক্ত আমদানিকারক ছিলেন, ঢাকার কলাবাগানের ক্রিসেন্ট রোডের ১৫৩/৩ কাঁঠালবাগান এলাকার রেড গ্রিন ইন্টারন্যাশনাল। অবৈধ আমদানিতে সহযোগিতায় ছিলেন, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আহাদ এন্টারগ্রাইজ।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, এ আমদানিকারকের মতো অসংখ্য ব্যবসায়ী আছেন, যারা এভাবে মাদকের পাশাপাশি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবাধে আমদানিযোগ্য পণ্যও পাচার করছে। মাঝে মধ্যে দু একটা চালান আটক হলেও অধিকাংশ থাকছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হলেও রাঘব বোয়ালরা থাকছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এতে কোনোভাবেই রোধ হচ্ছে না অবৈধ এ আমদানি।