যশোর হাসপাতালে ডেঙ্গু কর্ণার চালু ১৭ দিনে ভর্তি ১৮৫

ইয়ানূর রহমান : যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু কর্নার চালু হয়েছে। এ কর্নারে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের আলাদা রেখে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হচ্ছে। গতকাল কর্নারটি চালু করেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক। এদিকে, রোববার যশোরে নতুন করে আরো ৩৭ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।

এরমধ্যে ৮ জন জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে যশোরের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. ইমদাদুল হক রাজু জানান, গত ১৭ দিনে যশোর জেলায় মোট ১৮৫ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। চিকিৎসাসেবায় ১০৪ জন সুস্থ হয়েছেন। এখনো বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মোট ৮০জন।

হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিভিন্ন উপজেলা থেকেও চিকিৎসকরা রোগী পাঠাচ্ছেন। আবার ঢাকা থেকে এসে আক্রান্তরা চিকিৎসার জন্য এখানে ভর্তি হচ্ছেন। পুরুষ মেডিসিন, মহিলা মেডিসিন, পুরুষ পেইং ও মহিলা পেইং ওয়ার্ডে রোগীর চাপে পা ফেলার জায়গা নেই। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্তরা ও চিকিৎসাধীন। আবার ওয়ার্ডের মধ্যে জায়গা না পেয়ে বারান্দার মেঝেতেও রোগীর দীর্ঘ সারি পড়ে। রোগীর চাপ অব্যাহত থাকায় বিপাকে পড়ে হাসপাতাল র্কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত প্রতিটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গু কর্ণার চালু করে আকান্তদের পাশাপাশি রাখার ব্যবস্থা করেছে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু জানান, বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ৬৪ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আর ছাড়পত্র নিয়ে ফিরেছেন ২৪ জন। রোববার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন ৮ জন। তাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হচ্ছে। ডেঙ্গু রোগীদের প্রতি চিকিৎসক সেবিকারাও অনেকটা যত্মশীল।

তিনি আরো জানান, গত ১৭ দিনে হাসপাতালে ১২৩ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে গুরুতর ছিলো ২৫ জন। দীর্ঘ চিকিৎসাসেবায় তারা সুস্থ হয়েছেন। হাসি মুখে বাড়ি ফিরেছেন। এ পর্যন্ত হাসপাতালে কোনো ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত কেউ মারা যায়নি। সবাইকে সঠিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে পেরে তিনি আনন্দিত।

লিটু আরো জানান, ডেঙ্গু কর্ণার চালুর কারণে রোগীদের দুর্ভোগ কমবে। ডেঙ্গু জ্বরের পরীক্ষায় ব্যবহৃত কীট এনএস-১ আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে সরকারিভাবে হাসপাতালে পৌঁছাতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সিভিল সার্জন অফিস জানিয়েছে, যশোরে ডেঙ্গু রোগী বেড়ে যাওয়ায় তারাও দুশ্চিন্তায় রয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে তারাও প্রচার-প্রচারণা, আলোচনা সভাসহ নানা কার্যক্রম করছেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে ৩টি মনিটরিং টিম গঠন, ১টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে। টিমের সদস্যরা আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।

এদিকে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে যশোর পৌরসভা, যশোর জেলা আওয়ামী লীগ, চিকিৎসক সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) যশোর জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।

এছাড়া আগামী ৬ আগস্ট থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যক্রম শুরু করবে যশোর জেলা প্রশাসন। এদিন সকালে ডেঙ্গু জ্বর সচেতনতায় র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতত্বে একটি টিম যশোর পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের প্রতিটি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে নানা পরামর্শ দেবেন।