দুই সন্তানের অভিভাবকত্ব চেয়ে ও নিজের প্রতি নিপীড়ন বন্ধের আদেশ দিতে লন্ডনের একটি আদালতে আবেদন করেছেন দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ আল মাখতুমের স্ত্রী হায়া বিনতে আল হুসেন। মঙ্গলবার লন্ডনের উচ্চ আদালতের পরিবার বিভাগে এই আবেদন করেন তার আইনজীবী। এর বিরোধিতা করে সন্তানদের দুবাইয়ে ফেরত পাঠানোর আর্জি জানিয়েছেন সেখানকার শাসক। দুই দিনের শুনানির পর আগামী ১১ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
২০০৪ সালে ধনকুবের শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুমকে বিয়ে করে তার ষষ্ঠ এবং কনিষ্ঠতম স্ত্রী হন জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহর বৈমাত্রেয় বোন হায়া বিনতে আল হুসেন। এ বছরের শুরুতে জার্মানি পালিয়ে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন তিনি। পরে লন্ডনে পালিয়ে গিয়ে একটি বিলাসবহুল বাড়িতে উঠে নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। দুবাইয়ের শাসকের একাধিক স্ত্রীর ঘরে মোট ২৩টি সন্তান রয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়।
হায়া বিনতে হুসেনের ঘরে রয়েছে তার দুই সন্তান। দুবাই থেকে পালিয়ে এসে তারাও মায়ের সঙ্গে বসবাস করছেন। মঙ্গলবার লন্ডনের উচ্চ আদালতের পরিবার বিভাগে সন্তান ও নিজের প্রতি নিপীড়ন বন্ধের আবেদন করেন হায়া। অপরদিকে সন্তানদের দুবাইয়ে নিজের কাছে ফিরিয়ে নিতে আদালতে আবেদন করেছেন শেখ মোহাম্মদ আল মাখতুম।
দুই দিনের শুনানির পর বৃহস্পতিবার আগামী নভেম্বরে এই বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। তবে এই শুনানিতে দুবাইয়ের ধনকুবের এ শাসক আদালতে উপস্থিত ছিলেন না এবং তার প্রতিনিধিরাও এ নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
একই সঙ্গে এই মামলার খুব সামান্য তথ্যই প্রকাশের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দুই সন্তানের মধ্যে এক সন্তানের জোরপূর্বক বিয়ে ঠেকানোর আবেদন করেছেন হায়া। আরেক বার্তা সংস্থা পিএ জানিয়েছে, দুই সন্তানেরই অভিভাবকত্ব চেয়ে আবেদনের পাশাপাশি নিজের প্রতি নিপীড়ন বন্ধের আদেশ দেওয়ার আবেদন করেছেন দুবাই শাসকের ৬ষ্ঠ স্ত্রী। লন্ডনের আদালতে আইনি লড়াই শুরুর পর শেখ মোহাম্মদ আল মাখতুম ও হায়া বিনতে আল হুসেনের এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করা হয় এই মামলা তাদের সন্তানদের নিয়ে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, এই প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য হলো দুই সন্তানের বিয়ে বিষয়ক কল্যাণ। এর সঙ্গে বিচ্ছেদ বা অর্থনৈতিক লেনদেনের কোনো সম্পর্ক নেই।
যুক্তরাজ্যের পারিবারিক আদালতের বিষয়াবলী নিয়ে তথ্যপ্রকাশের ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে। কোনো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে আদালত কক্ষে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয় না। তবে এই মামলায় মানুষের আগ্রহ বিবেচনায় নিয়ে সামান্য তথ্য প্রকাশের অনুমোদন দিয়েছেন লন্ডনের উচ্চ আদালতের পারিবারিক বিভাগের প্রেসিডেন্ট স্যার অ্যান্ড্রু ম্যাক ফারলেন।