স্টাফ রিপোর্টার,ঈশ্বরদী ॥ পাকশী রেলওয়ে হাসপাতালের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারিদের দায়িত্বে অবহেলা,কমিশন নিয়ে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের কর্ম থেকে বিরত রাখা,মাদক দ্রব্যসহ গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে থাকার পরও মাসিক বেতন প্রদানসহ অনিয়ম ও দূর্ণীতির মাধ্যমে রেলওয়েকে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং হাসপাতালের ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন হচ্ছে। একাধিক দায়িত্বশীল সুত্রের দেওয়া অভিযোগে এসব তথ্য জানাগেছে।
সূত্রমতে, পাকশী রেলওয়ে হাসপাতালের স্যানেটারী বিভাগের পরিচ্ছন্ন কর্মী রকিবুল ইসলামকে ১২ পিচ ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে গত ২১ জুন সকালে ঈশ্বরদীর মাজদিয়া রেললাইন এলাকা থেকে। গ্রেফতারের পর থেকে অদ্যবধি সে পাবনা জেল হাজতে রয়েছে।( ঈশ্বরদী থানার মামলা নং-৪৮/৩৮৮,তাং-২১.০৬.২০১৯) একদিনও সে কর্মস্থলে উপস্থিত হতে পারেনি । অথচ হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাজী হারুন অর রশিদের সহযোগিতায় তার জুন/১৯ মাসের নিয়মিত বেতন বিল প্রদান করা হয়েছে। একউভাবে জুলাই/১৯ মাসের বেতন বিলও প্রদানের কার্যক্রম চলছে। শুধু তাইনা,বর্তমান ১৭ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মীর মধ্যে ৫ জন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১০ জনের অনুকুলে ৩ জন মুসলমান মহিলা দিয়ে বদলী পরিচ্ছন্ন কর্মীর দায়িত্ব পালন করানো হচ্ছে অবৈধভাবে। যাদের বেতন না দিয়ে ভাতা দেওয়া হয় মাত্র সাড়ে ৩ হাজার টাকা করে। অথচ একজন বৈধ পরিচ্ছন্ন কর্মীর বেতন ১২ হাজার টাকা। এক কথায় দীর্ঘ প্রায় ২১ বছর ধরে একই হাসপাতালে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনের পর ২০১৫ সাল থেকে প্রধান সহকারীর দায়িত্ব পেয়ে দূর্ণীতির রাম রাজত্ব কায়েম করেছেন তিনি।
এর আগেও বিগত ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পাকশী রেলওয়ে হাসপাতালের স্যানেটারী বিভাগের পরিদর্শক পদ শূণ্য থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্বভার গ্রহণ করেন হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাজী হারুণ অর রশিদ। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ঐবিভাগে শুরু হয় অনিয়ম ও দূর্ণীতি। তিনি ১৭ জন পরিচ্ছন্ন কর্মীদের পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন। এ অবস্থায় ১৭ জন কর্মীর ১১ জনের সাথে মাসোয়ারা চুক্তিতে আবদ্ধ হন। প্রতি মাসে প্রতিজনের নিকট থেকে ৭ হাজার টাকা হারে ৭৭ হাজার টাকা করে প্রায় তিন বছর যাকত মাসোয়ারার টাকা আদায় করেন। এতে রেলওয়ে অর্থ ব্যয় করেও কাঙ্খিত সার্ভিস থেকে বঞ্চিত হলেও প্রধান সহকারী কাজী হারুণ অর রশিদ আর্থিকভাবে লাভবান হন। আশ্চর্য্যরে বিষয় হল,তিনি স্যানেটারী বিভাগের পরিদর্শক পদে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কালিন সময় ২০১৮ সালে পরিচ্ছন্ন কর্মী রকিবুল ইসলাম মাদকের মামলায় গ্রেফতার হয়ে হাজত বাস করেন। এ অবস্থায় রকিবুলকে কর্মস্থলে স্বশরীরে হাজিরা দেখিয়ে প্রায় ৩/৪ মাসের বেতন উত্তোলন করিয়েছেন। এসমস্ত অনিয়ম দূর্ণীতির কারণে হাসপাতালের স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট হয়েছে এবং রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছে। এসব অনিয়ম ও দূর্ণীতির কারণে পাকশী রেলওয়ে হাসপাতালটি দিনে দিনে মুখ থুবড়ে পড়ছে। নানা অনিয়মের ফলে অন্যান্য কর্মচারী ও এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সচেতন মহল এসব অনিয়মের সুষ্ঠ তদন্ত দাবি করেছেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে পাকশী রেলওয়ে হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাজী হারুন অর রশিদ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত পরিচ্ছন্ন পরিদর্শকের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছি। বদলী পরিচ্ছন্ন কর্মীদের মধ্যে ৩ জন মহিলা ও ২ জন পুরুষ ছিল আমার দায়িত্ব পালনের সময়।