রাজশাহী জেলাজুড়ে সরকারি খাস খাল,খাড়ি,পুকুর ও দীঘিসহ হাজার হাজার জলাশয় রয়েছে প্রভাবশালীদের দখলে। সরকারি বিধান অনুযায়ী এসব সরকারি সম্পদ মাছ চাষের জন্য প্রকৃত মৎস্যজীবীদের ইজারা দেয়ার কথা। কিন্তু ইজারার শর্ত অনুযায়ী সমবায় ও সমাজসেবা দপ্তর থেকে নিবন্ধন পাওয়া মৎস্যজীবী সমিতি দরপত্রে অংশ নিতে পারবে। কিন্তু এই দরপত্রে অংশ নিতে তাই জেলাজুড়ে সমিতি গড়ার হিড়িক পড়েছে। রাজনৈতিক প্রভাবে রাতারাতি গজিয়ে উঠছে মৎস্য সমবায় সমিতি। এফিডেভিট করে বলা হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুলবশত ভিন্ন পেশা লেখা হয়েছে। এদিকে,জেলার পবা উপজেলায় ৭৩৯.১০ একর,তানোরে ৬৪৩.৮৫,মোহনপুরে ২১২.২৭,পুঠিয়ায় ৩১৮.৮৪,দুর্গাপুরে ৫৪০.৫১,চারঘাটে ৩৪৫.৬৪, বাঘায় ১১৮৬.০১,গোদাগাড়ীতে ২৫৭৮.৯১৯৭ এবং বাগমারায় রয়েছে ৫৭৭.০৭ একর খাস জলাশয় রয়েছে।
কিন্তু এসব খাস জলাশয় বিগত কয়েক বছর ধরে প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে। এতে করে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। অন্যদিকে পকেট ভরছে ক্ষমতাসীন প্রভাবশালীদের। আর এসব খাস পুকুর উদ্ধারে তেমন কোন উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। এমনকি কে কিভাবে পুকুরগুলো দখলে নিয়েছেন সেটাও অজানা উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মচারিদের। জেলা ভূমি ও মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বাগমারা উপজেলায় ৮৪৯টি খাস পুকুর ও ১৫টি বিল রয়েছে।
এর মধ্যে অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিত ২৬০টি পুকুর উপজেলা ভূমি অফিস এবং খাসগুলো বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কয়েক বছর ধরে ইজারা দিয়ে আসছিল। অথচ সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করে সংশিষ্ট মন্ত্রণালয় নীতিমালায় বলা হয়েছে, প্রতিটি মৎস্যজীবী সমিতিকে সর্বোচ্চ দুটি করে জলমহাল ইজারা দেয়া যাবে। সে ক্ষেত্রে উপজেলায় মৎস্যজীবী সমিতির সংখ্যা ৩০টি। এর মধ্যে কয়েকটি সমিতি আগেই একাধিক পুকুর পেয়েছে। আর বাকিগুলো দখল করে রেখেছে প্রভাবশালী মহল বলে এলাকায় ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে। এবং তারা দৌড় ঝাঁপ শুরু করে রাজনৈতিক প্রভাবে সহজে পেয়েগেছে সমিতির নিবন্ধন। এখানকার জেলেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যাদের কেউ মৎস্যজীবী ছিল না,জাল হাত দিয়ে নেড়েও দেখেনি। জাল কিভাবে ফেলতে হয় তাও জানে না। এখন তারা বড় মৎস্যজীবী বুনিয়েগেছেন। এ দিকে গোদাগাড়িতে সাড়ে তিন হাজার খাস পুকুর-দিঘী রয়েছে। এর মধ্যে এক হাজারের বেশি পুকুর-দিঘী প্রভাবশালী মহল জাল কাগজপত্র করে আদালতে মামলা করে ইজারা আটকে রেখে ভোগ দখল করছে।
এসব পুকুর-দিঘী ক্ষমতাসীন দলের লোকজন মৎস্যজীবীদের কাছে বছরওয়ারী চুক্তিতে লিজ দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল অংকের টাকা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন, সরকারি খাস পুকুর-দিঘী- জলাশয় ইজারা দেবার জন্য সরকারী নীতিমালা রয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের লোকজন সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন। পুঠিয়ায় প্রায় দেড়শ পুকুর-দিঘী দ’ুচারটি বাদে সবগুলো রয়েছে অবৈধ দখলে। এসব খাস দিঘী-পুকুর প্রভাবশালীরা দখল করে ইজারা দিয়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব প্রভাবশালীদের কাছে প্রশাসন অসহায়। এছাড়া পবা উপজেলায় ৭৩৯.১০ একর,মোহনপুরে ২১২.২৭, দুর্গাপুরে ৫৪০.৫১, চারঘাটে ৩৪৫.৬৪, এবং বাঘায় ১১৮৬.০১, একর সরকারি খাস খাল,খাড়ি,পুকুর ও দীঘিসহ জলাশয় রয়েছে। আর এসব জলাশয় থেকে সরকার প্রতিবছর হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয়।