টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মগড়া ইউনিয়নের “বড় বাসালিয়ায় সেতুর” পশ্চিম অংশের এ্যাপোচ প্রবল পানির তোড়ে ভেঙ্গে পড়ায় হুমকির মুখে পড়েছে সেতুটি।স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের অধীন টাঙ্গাইল এলজিইডির তত্বাবধানে “বুড়ি গঙ্গা নদী পুররুদ্ধার প্রকল্প”(নতুন ধলেশ্বরী-পুংলী-বংশাই-তুরাগ-বুডিগঙ্গা) ফাউন্ডেশন টিটমেন্ট এর আওয়াত ৮৮ লক্ষ টাকায় ব্যায়ে নির্মিত এই এ্যাপোচ উদ্ধোধনের ১৫ দিনের মাথায় ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে যে কোন সময় পুংলী নদীর উপর নির্মিত ৯৯ মিটার র্দীঘ এই আরসিসি সেতুটি ভেঙ্গে পড়তে পারে। সেতুটি ভেঙ্গে পড়লে বন্ধ হয়ে যাবে টাঙ্গাইল সদর-কুইজবাড়ী-বড়বাসালিয়া হয়ে এলেঙ্গা যাবার সড়কটি।
এ ছাড়া পুংলী নদীর ভাঙ্গনে গৃহহীন হয়েছে সেতুর পশ্চিম পাড়ের ১৫ টি পরিবার। স্থানীয় মগড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সহ ভাঙ্গনের শিকার পরিবারগুলো এর জন্য দায়ী করছে শুষ্ক মৌসুমে পুংলী নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনকে।
বড় বাসালিয়া গ্রামের ভাঙ্গনে গৃহহীন মোঃ দুলাল হোসেন ক্ষোভের সাথে এই প্রতিবেদককে বলেন. ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ৪ লেন প্রকল্পকের জন্য এবার শুষ্ক মৌসুমে প্রভাবশালী লোক জন বাংলা ড্রেজার বসিয়ে সারা বছর অপরিকল্পিত ভাবে নদীর পাড় থেকে বালু উত্তোলন করেছে। ফলে নদীর পাড়ে নদী গভীর হয়েছে আর মধ্য ভাগে অগভীর রয়ে গেছে। এখন পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে সেতুর এ্যাপোচ সহ বড় বাসালিয়া গ্রামের ১৫ টি বাড়ী নদী গর্ভে চলে গেছে।
আরেক পুংলী নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ বড় বাসালিয়ার লবন ও মরিচ ব্যাবসায়ী নির্মল চন্দ্র সাহা জানান, সেতুটির ক্ষতি দেখতে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ও উপজেলা চেয়ারম্যান এসে সেতু দেখে চলে গেছে। তারা আমাদের দেখতে আসেনি। আমরা বড় বাসালিয়ার ১৫ টি গৃহহীন পরিবার কোথায় গিয়ে থাকবো, সেই ব্যাপারে কোন ধরনের ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত গ্রহন করা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে ১ নং মগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আজহারুল ইসলাম জানান, প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে প্রভাবশালী ব্যাক্তিবর্গ বাংলা ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে। এ বছর নদীর কালিহাতী অংশে ঢাকা-টাঙ্গাইল হাইওয়ের জন্য বালু উত্তোলন করে স্তুপ করে রাখা হয়েছে। যেটার প্রভাব পড়েছে এই সেতু সহ বড় বাসালিয়া বেশ কয়েকটি পরিববারের উপর। আমরা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে যত দ্রুত সম্ভব সেতুটি রক্ষা ও ভাঙ্গনের শিকার ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ত্রানের ব্যবস্থা করছি।
টাঙ্গাইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ গোলাম আজম বলেন, প্রবল বৃষ্টি ও বন্যার পানির তোড়ে সেতুটির দক্ষিন দিকের এ্যাপোচটি ভেঙ্গে গেছে। ইতিমধ্যে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মোঃ শহিদুল ইসলাম ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান আনসারী সেতুটির গুরুত্ব বিবেচনা করে পরিদর্শন করেছেন। আমরা সেতুটি রক্ষার জন্য তাৎক্ষনিক কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছি। পানি কমে গেলে সেতুটি রক্ষার স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রাথমিক ভাবে সেতুটি রক্ষার দায়িত্ব স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের তথা এলজিইডির। আমি সরেজমিনে পরিদর্শনে যাব। যদি পুংলী নদীর পাড় রক্ষার প্রয়োজন হয়ে পড়ে তবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে টাঙ্গাইল নদী ভাঙ্গন এলাকা হওয়া সত্বেও টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের জন্য আপদকালীন বরাদ্দ অপ্রতুল।তাই খুব বেশী কিছু করা যাবে বলে মনে হয়না।