চলতি বর্ষা মৌসুমকে কেন্দ্র করে নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় জমে উঠেছে চারা গাছ কেনা-বেচার মৌসুমী হাট। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির চারা গাছ অতি সহজ মুল্যে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার বেশীর ভাগ এলাকা বরেন্দ্র ভুমি হওয়ার কারনে এখানে বর্ষার পানি উঠেনা তাই এলাকায় বাগানে গাছের চারা লাগানো খুবই সহজ সময় এখন। দীর্ঘ দিন ধরে উপজেলা পরিষদরে অদুরে বসছে এই চারা গাছের মৌসুমী হাট এখানে ফলজ,বনজ, ওষুধি ও ফুল গাছের চারা দেদারছে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে বিদেশি প্রজাতির আকাশমনি, ইউক্যালিপটার্স, মেহগনি সহ দেশি জাতের আম, জাম, কাঁঠাল, লেবু, পেয়ারা, জলপাই, পেঁপে এবং নিম সহ ওষুধি গাছের চারা বিক্রি হতে দেখা গেছে।
উপজেলা সদরের অদুরে অবস্থিত এই বিশাল চারার হাটে প্রায় ৪০/৫০টি চারা গাছের দোকান রয়েছে যেখানে প্রতিদিন গড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার চারাগাছ বেচা কেনা হয়।
চারা বিক্রেতা রিপন, সালাম ও শরিফুল জানান এবারে উপজেলার এ মৌসুমী চারার হাটে বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষের ভিড় লক্ষ করা গেছে। প্রতিদিন তারা আম বিক্রি করে এই হাট থেকে আ¤্রপালি, গৌরমতি,বারী-৪ ,খিরশাপাত, নাক ফজলি,আর্শিনা ও বারমাসী কাঠিমন জাতের আমের চারা,চায়না থ্রী লিচু ও থাই হাইব্রীড নারিকেল গাছের চারা বেশী ক্রয় করছে। আকাশমনি, ইউক্যালিপটার্স, মেহগনি সহ অন্যান্য বনজ গাছের চারা ২০/২৫ টাকা দরে বিক্রি হলে ও ফলদ গাছের চারা যেমন আ¤্রপালি চারা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬৫ টাকা কাঠিমন২০০ থেকে ২৫০ টাকা, আর্শিনা-১০০ থেকে ১২০ টাকা,বারী ফোর-৭৫ থেকে ৮০ টাকা করে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ বছর বাজারে আমের দাম খুব ভাল থাকায় কৃষকগণ নতুন নতুন বাগান তৈরীতে ঝুকে পড়েছে। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর সব ধরনের গাছের চারার দাম একটু হলেও বেশি।
সাপাহার ও তার আশে পাশের নার্সারী মালিকগণ তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন প্রজাতির চারা গাছ এই হাটে বেচাকেনা করছে। এ ছাড়া রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ,বগুড়া ও নওগাঁ জেলা থেকে চারা ব্যবসায়ীরা ট্রাকে করে বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার চারা গাছ এনে এ উপজেলার মৌসুমী হাট সহ বিভিন্ন হাট বাজারে রেখে বিক্রি করছে। বাজারে বেশ কয়েকজন চারা ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তারা জানায়, সাপাহার অঞ্চলের লোকজন বনজ জাতের চারা গাছ লাগানোর চাইতে ফলজ জাতের চারা গাছ বিশেষ করে আম গাছের চারা রোপনের ব্যপারে খুবই উৎসাহী। সাপাহার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মজিবুর রহমান জানান, ঠাঁঠা বরেন্দ্র এ উপজেলায় জলবায়ুর কারণে ধানের চাইতে আম চাষে কৃষক বেশী লাভবান হচ্ছে। বিশেষ করে এ উপজেলার উৎপাদিত সুমিষ্ট রসালো ফল আম বর্তমানে দেশের সর্বখানে বিশেষ ভাবে খ্যাতি অর্জন করেছে। আম বাগান তৈরী করে ইতোমধ্যে অনেক কৃষকের ভাগ্যে বদলে গেছে। উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভীদ সংরক্ষন কর্মকর্তা আতাউর রহমান সেলিম জানান উপজেলার সদরের অদুরে স্থাপিত ওই চারার হাটে বিভিন্ন প্রজাতীর আমের চারার সমাহার দেখে এ উপজেলার লোকজনের পাশাপাশি দুর দুরান্ত থেকে লোকজন এখানে এসে আমের চারা সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে এই উপজেলায় ৫হাজার ৫শ হেক্টোর জমিতে আম বাগান তৈরী হয়েছে। আম এ উপজেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেশ ভুমিকা রাখছে। তাই সব মিলিয়ে সাপাহার উপজেলার সর্বস্তরের কৃষকদের মাঝে আম চারা রোপনে ব্যাপক প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।