সাকিব আল হাসান, রোহিত শর্মা ও মিচেল স্টার্ক এই তিনজনকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপের আসর সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতলেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ইংল্যান্ডের কাছে সুপার ওভারের ম্যাচে হারলেও কিউই অধিনায়ক ৫৭৮ রান ও দুই উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্ট সেরা নির্বাচিত হন।
এ পুরস্কারটি পাওয়ার দাবিদার ছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এবারের বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে ৬০৬ রান করার পাশাপাশি বল হাতেও শিকার করেন ১১ উইকেট।
এ নিয়ে বাংলাদেশি সমর্থকদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কারণ, ব্যাটিং পারফরমেন্সের হিসেবে দিলেও তো উইলিয়ামসন সাকিবের পেছনে, আর বোলিং নৈপুণ্য ছিল সাকিবের বাড়তি পাওনা। তাই কপিল দেবসহ বিশ্বের কিংবদন্তি ক্রিকেটাররা সাকিবকেই প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট বিবেচনা করেছিলেন।
বিশ্বকাপের শুরু থেকে একেবারে যেদিন বাংলাদেশ টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়েছে সেদিন পর্যন্ত সাকিব আল হাসানের দিকে তাকিয়ে আশাবাদী ছিলেন বাংলাদেশের ভক্তরা। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেরা চারে তো উঠতে পারেনি, আট নম্বরে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করেছে লাল-সবুজের দল।
তবে দল সাফল্য না পেলেও, সাকিবকে নিয়ে আশাবাদী ছিলেন সবাই। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ব্যক্তিগত সাফল্য তাঁর হাত ধরে। না, অধরাই থেকে গেল।
বিশ্বকাপের মতো আসরে সাকিবের মতো অলরাউন্ড পারফরম্যান্স আর কারো নেই। বাংলাদেশি অলরাউন্ডারের পরিসংখ্যান ও পারফরম্যান্স এই একটি জায়গাতেই ম্লান হয়ে যায়, কারণ বাদবাকি যারা সব তালিকার ওপরের দিকে আছেন তারা সবাই অন্তত সেমিফাইনাল খেলেছেন, কয়েকজন ফাইনালেও জায়গা করে নিয়েছেন।
কিন্তু তাদের চেয়ে সাকিব একটা জায়গাতে এগিয়ে আছেন, সেটা হলো ব্যাটে বলে এমন পারফরম্যান্স আর কেউই দেখাতে পারেননি। সাকিব মোট আটটি ম্যাচে ব্যাট হাতে মাঠে নামেন, ৬০৬ রান তুলেছেন, ৮৬.৫৭ গড়ে। সাকিবের গড় টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বল হাতে সাকিব আট ম্যাচে নিয়েছেন ১১টি উইকেট।
অর্থ্যাৎ ব্যাটিং ও বোলিং দুই বিভাগেই সাকিব দলের তিনটি জয়ে ভূমিকা রেখেছেন। প্রথম দুটি জয়ের একটিতে সেঞ্চুরি করেছেন, একটিতে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও সেঞ্চুরি করেছেন। মোট আট ম্যাচ খেলা সাকিব সাতটি ইনিংসেই ন্যূনতম ৫০ রান অতিক্রম করেছেন। বিশ্বকাপে তাঁর সর্বনিম্ন সংগ্রহ ৪১ রান।
বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাসে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ৬০০ এর ওপর রান ও ১০টিরও বেশি উইকেট নিয়েছেন সাকিব।