ইয়ানূর রহমান : আগামী ১৭ জুলাই ঢাকা-বেনাপোল রুটে এই প্রথম রেল চালু হওয়ার উদ্বোধন হবে বলে আনুষ্ঠানিক ঘোষনা দিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহা পরিচালক শামসুজ্জামান।
তিনি আরো বলেন, ঢাকা বেনাপোল রেল চালু শুরু হলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নও হবে সমৃদ্ধি শালী। মানুষ রাজধানী ঢাকা থেকে যানজট মুক্তহীন নিরাপদে বেনাপোল আসতে পারবে। কারন বেনাপোল আন্তর্জাতিক বর্ডারসহ এখানে রয়েছে ভারত বাংলাদেশ তথা এশিয়া মহাদেশের সর্বোবৃহৎ স্থল বন্দর। ব্যবসা বানিজ্য সহ পাসপোর্ট যাত্রীদের সহ এই অঞ্চলের মানুষের জন্য এই রেল হবে মাইল ফলক বেনাপোল রেল ষ্টেশনে তৈরী হবে বঙ্গবন্ধর ম্যুরাল।
শনিবার দুপুর ১২ টার সময় তিনি বেনাপোল রেল ষ্টেশন পরিদর্শন শেষে প্রধান অতিথি হিসাবে এ কথা বলেন। এর আগে তিনি বেনাপোল রেলষ্টেশনে সকাল ১০ টায় পৌছালে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা দেন শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের নের্তৃবৃন্দ।
বেনাপোল রেল স্টেশনের পুলিশ ইমিগ্রেশন রুমে বেনাপোল সিএন্ড এফ এজেন্ট এ্যসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি রেলওয়ের মহাপরিচালক শামসুজ্জামান বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য সব থেকে বড় উপাদান হচ্ছে যোগাযোগ মাধ্যম। পৃথিবীর যে দেশ যোগাযোগ ব্যবস্থায় যত ভাল সে দেশ তত উন্নত। তিনি বলেন, আজ এই বেনাপোলে যে রেল যোগাযোগ হচ্ছে সরাসরি ঢাকার সাথে তার ফসল ভোগ করবেন আপনারা। এখানকার জনগন, পাসপোর্টযাত্রীসহ দেশি বিদেশী পর্যটকারা যাতে সহজে রাজধানী ঢাকায় যানজট মুক্ত অবস্থায় আসা যাওয়া করতে পারে তার জন্য আগামি ১৭ তারিখ থেকে শুরু হবে এ ট্রেনটির যাত্রা। স্বয়ং প্রধান মন্ত্রী ঢাকা থেকে বেনাপোল-ঢাকা ও নবাবগঞ্জ নতুন দুটি রুটের দুটি রেলের শুভ উদ্বোধন করবেন। বেনাপোল রেল ষ্টেশনে ভিডিও কনফারেন্স উপস্থিত থাকবেন রেল মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। ট্রেনটির নাম ইতিমধ্যে নির্বাচন করা হয়েছে ”বেনাপোল এক্সপ্রেস” নামে।
প্রধান অতিথি বলেন, এই জনপদে এক সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও উন্নয়নের জন্য কয়েক দফায় এসেছেন। তিনি এই জনপদের উন্নয়ন নিয়ে ভাবতেন। আজ তার সে স্বপ্ন বাস্তাবায়ন করছেন তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি বেনাপোলসহ প্রতিটি রেল ষ্টেশনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মুর্যাল তৈরী করার। এই রেলটি সহ রেলের সকল সম্পদ আপনাদের সম্পদ। এই সম্পদ ধরে রাখার দায়িত্ব কর্তব্য আপনাদের। আপনারা দেখবেন কোন অপরাধি যাতে এই সম্পদের ক্ষতি সাধন না করে। চোরাচালানিরা যেন রেলের কোন অংশ কেটে তাদের চোরাই পন্য না ঢুকাতে পারে। তাহলে তা সহজে মেরামত করা সম্ভব হবে না। বেনাপোল থেকে আজ যে, ”বেনাপোল এক্সপ্রেস” নামে রেল চালু হচ্ছে ভবিষ্যতে এ রুটে আরো ১টি রেল দেওয়া হবে তা আমাদের পরিকপ¬না রয়েছে। এছাড়া বেনাপোল থেকে নড়াইল হয়ে মাওয়া দিয়ে পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে ঢাকায় রেল চালু হবে। ঢাকা বেনাপোল রুটে বেনাপোল থেকে সোয়া একটায় ট্রেন ছেড়ে যাবে। ঢাকায় পৌছাবে রাত ৯ টায় আবার ঢাকা থেকে রাত ১২.৪০ মিনিটে ছেড়ে বেনাপোল পৌঁছাবে সকাল ৮ টায়। ট্রেনটিতে ১২টি বগি থাকবে। দুটি এসি চেয়ার ১টি কেবিন ও বাকি ৯টি থাকবে চেয়ার কোচ। মোট আসন সংখ্যা হবে ৯০০। বেনাপোল এক্সপ্রেস ননএসি শোভন এর টিকিট হবে ৪৮৫ টাকা, এসি চেয়ার এর ভাড়া হবে ৯৩২ টাকা, এবং কেবিন এর ভাড়া হবে ১১১৬ টাকা। ৫ সিট ও ৮ সিটের কেবিন থাকবে। সপ্তাহে ৬ দিন বিরতিহীন ভাবে বেনাপোল এক্সপ্রেস নামে ট্রেনটি চলবে। বেনাপোল রেল ষ্টেশনে যাত্রীদের জন্য পানির ব্যবস্থা এক মাসের মধ্যে নিশ্চিত করার কথাও তিনি বলেন। আর রেল রক্ষনাবেক্ষনের জন্য পুলিশ প্রশাসনকে তিনি দেখ ভালের জন্য জোর পদক্ষেপ নিতে বলেন । তিনি বলেন এ ট্রেনটিতে বায়ো টয়লেট থাকবে। এর বগি আমদানি করা হয়েছে ইন্দোনেশিয়া থেকে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রেলের অতিরিক্ত সচিব প্রনব কুমার ঘোষ মহাব্যবস্থাপক খন্দকার শহিদুল ইসলাম, প্রধান অডিট অফিসার মোঃ আব্দুল মান্নান, প্রধান বানিজ্যক কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ, প্রধান সংকেত ও টেলি প্রকৌশলী অসীম কুমার তালুকদার, প্রধান প্রকৌশলী আফজাল হোসেন, যশোর জেলার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শওকাত হোসেন, শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মঞ্জু, শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুলক কুমার মন্ডল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাউদ্দিন আহম্মেদ।