রাজশাহীর হলিদাগাছী এলাকায় তেলবাহী ট্রেনের ৮টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এ ঘটনার পর রাজশাহীর সাথে দেশের রেলপথ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে হলিদাগাছি রেলগেইটের পশ্চিমে দিঘলকান্দি ঢালানের কাছে বগি লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের টেলিযোগাযোগ ও সংকেত শাখার একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তেলবাহী বগিগুলো লাইনে তুলতে অনেক সময় লাগবে। এ কারণে বুধবার রাতে রাজশাহীর সাথে সারাদেশের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক নাও হতে পারে।
পার্শ্ববর্তী সরদহ রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার নাজনিন আক্তার এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তেলবাহী ওই ট্রেনটি ইশ্বরদী থেকে রাজশাহী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুরের দিকে যাচ্ছিল। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ঈশ্বরদী থেকে রিলিফ ট্রেন আসলে উদ্ধার কাজ শুরু হবে।
অন্যদিকে রাজশাহী রেল স্টেশন মাস্টার জাহিদুল ইসলাম বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সারদা স্টেশন থেকে এক কিলোমিটার পশ্চিমে ট্রেনটির ৮টি বগি লাইচ্যুত হয়। এতে রাজশাহীর সঙ্গে সকল রুটের ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও লাইনচ্যুত বগি উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে লাইনচ্যুত বগি উদ্ধারে বেশ সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সিগনাল বিভাগের প্রধান অনিল কুমার তালুকদার বলেন, তেলবাহী ট্রেনের ৮টি বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় রাজশাহীর সাথে সারাদেশের সবধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে রাজশাহীর বাঘায় অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে আন্তনগর মধুমতি ট্রেন। বাঘা উপজেলার আড়ানী রেলওয়ে স্টেশনের আউটার সিগনালের পূর্বে ঝিনা রেলবাজার সংলগ্ন এলাকায় রেললাইন ভাঙা দেখতে পায় স্থানীয় আবু তাহের। এ সময় গোয়ালন্দঘাট থেকে ছেড়ে আসা মধুমতি ট্রেনটি রাজশাহীর দিকে আসছিল। পরে স্থানীয়রা একত্রিত হয়ে টর্চ লাইটের আলো জ্বালিয়ে লাল কাপড় টানিয়ে দিলে ট্রেন থামিয়ে দেন পরিচালক রাজু আহম্মেদ। তবে যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে ভাঙাস্থানে ভেজা চট দিয়ে এবং গতি কমিয়ে ট্রেনটি ভাঙাস্থান পারাপার করা হয়। এ ঘটনা গত মঙ্গলবার (৯ জুলাই) রাত ৮ টার দিকের।
এ ব্যাপারে আড়ানী রেল স্টেশন মাস্টার একরামুল হক বলেন, স্থানীয়দের সহযোগিতায় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে মধুমতি ট্রেন। তবে ট্রেনের সময়ের কোন বিপর্যয় হয়নি। যথা সময়ে ট্রেন চলাচল করেছে।
আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদের ঝিনা গ্রামের মেম্বর মাসুদ রানা জানান, এ সময় তিনি ঝিনা বাজারে ছিলেন। মানুষের চেচামেচি শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন রেল লাইন ভাঙা। তার পরপর মধুমতি ট্রেনটি চর্ট লাইটের আলো জালিয়ে লাল কাপড় উচু করে টানিয়ে ট্রেন থেমে দিয়ে রক্ষা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, আড়ানী স্টেশনের ৪০০ মিটার পূর্ব দিকে ঝিনা রেলগেটে ২০১৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর সারাদেশে আলোচিত লাল মাফলার দিয়ে তেলবাহী ট্রেন থামিয়ে দেয় দুই শিশু শিহাব ও লিটন। এর ৫০০ মিটার পূর্বে আড়ানী রেল স্টেশনের আউটার সিগনালের পূর্বে দেড় বছর পর আবারও ঝিনা রেলবাজার সংলগ্ন এলাকায় রেললাইন ভাঙা দেখতে পান স্থানীয় আবু তাহের। ফলে যাত্রীবাহী মধুমতি ট্রেন থামিয়ে দিয়ে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ বাচিঁয়ে দিলেন তিনি।