পুনর্মিলন

এনামুল হক টগর

জীবন এখন বহুদূর পেরিয়ে ক্লান্ত পথিক মহাকাল দিকে ধাবমান!
মানব হলো সৃষ্টির সসীম তপস্যায় চেতনা অসীম একত্ববাদে পুনর্মিলন মিলন!
জীবনের পূর্বনাম শুক্রকীট জন্মের রূপান্তরে দেহ ধারণ রহস্যময় প্রাণ!
বিশ্ব জুড়ে মহাত্মার চৈতন্য অনাদি অনন্ত অক্ষয় অব্যক্ত চিরজীবি!
অতীন্দ্রিয় অভিজ্ঞতায় হৃদয়ের গভীরে স্রষ্টার সাথে দূরত্ব নেই শ্বাশত চির-সজিব!
মায়ের পবিত্র জঠর থেকে মানব রূপে এই মাতৃভূমিতে জন্মই অধিকার আহ্বান-
প্রথম যে দিন আমি এই মাটিতে ভূমিষ্ঠ হলাম পুরাতন থেকে পৃথিবীতে নতুন!
এই মহা-জতগকে আলিঙ্গন করলাম বৈচিত্র্যে পুনর্জাগরণ!
আমি স্বপ্নের গভীরে প্রিয় মাতৃভূমিকে আলিঙ্গন করলাম পুনর্জীবন!
নব শৈশব বেড়ে উঠা কৈশোর জন্মের প্রতিশ্রুতি প্রগতির স্পন্দনে পুনর্মিলন!
গায়ের ছোট নদী বড় নদী আঁকা বাঁকা কুল কুল ঢেউয়ে ঢেউয়ে ধ্বনি প্রতিধ্বনি।
মুক্ত হাওয়া দিগন্ত সবুজের মাঠ সোনালী শস্য পুষ্প বাগিচায় বসন্ত নন্দন।
পাঠশালায় লেখা পড়া শিক্ষকের শাসন পিতা মাতার আর্দশ শিক্ষা জীবন।
গুল্লাছুট পলান টুক টুক কানামাছি সিবুড়ি ছুটোছুটি চঞ্চল মন জাগরণ,
অরণ্য প্রকৃতির বুকে চাঁদের জ্যোৎস্না হাসে কামিনী হাসনা হেনা চন্দন।
প্রভাত পাখিগুলো দূর আকাশে পাখা মেলে উড়ে যায় খাদ্যের আহরণ।
গায়ের কৃষাণ কৃষাণি ফসল ফলায় সুষম বণ্টন নবান্ন উৎসব আভরণ।
প্রিয়তম পিতা প্রিয়তম মাতা প্রিয়তম জন্মভূমির বন্ধনে ভালোবাসার স্বজন।
দুঃখ কষ্টের গভীরে আমার নব জন্ম অতীন্দ্রিয় আলিঙ্গন করে বিদগ্ধ সর্বজন!
বাবার চাকুরি জীবন মানসিক হাসপাতাল মুক্তিযুদ্ধ প্রথম সূর্যদোয় বিজয় ভূখণ্ড সীমানা।
কিশোর তারুণ্যে আমার দুচোখ আনন্দ অশ্রু ঝরে মহামিলন স্বাধীনতার প্রেম বন্ধন।
ক্ষণকাল পরে হৃদয়ের গভীরে করুন আর্তনাদ অনাগত অশনি বিষাদের বার্তা ক্রন্দন।
অভাব অনাটন দরিদ্র ক্ষুধায় অসহায়রা আর্তচিৎকার করে সিক্ত দুটি নয়ন।
পৃথিবীর বিচূর্ণ সময় নিষ্ঠুর প্রতিক্ষা করে স্বজন প্রিয়জনের জীবন মরণ!
তৃ্ষ্ণার্ত হৃদয়ে অতন্দ্র দেশপ্রেমিক মানবতাকে আলিঙ্গন করে জীবনের পরিচয়।
হে বন্ধু যদি আমি আর কোন দিন ফিরে না আসি পৃথিবীর কর্ম চেতনায়,
তবে বুঝে নিও আমি ঘুমিয়ে পড়েছি আমি ঘুমিয়ে পড়েছি নিরব শান্ত অবেলায়।
সময়ের প্রবাহে কৈশোর পেরিয়ে আমি এখন ধীরে ধীরে বহুদূর ভেদাভেদ মুক্ত আহবান –
ভবিষ্যৎ সংঘর্ষময় যৌবন হেঁটে যায় প্রগতিশীল সমৃদ্ধির,পথে দক্ষ নিপুণ।
ভালোবাসা লুকোচুরি হাডুডু গাদন মাছধরা পুসুরি বনভোজন ছেলাবেলা চঞ্চল।
বড়াল ইছামতি ধলেশ্বরী চিকনাই ভৈরব বুড়িগঙ্গার বুকে ভেসে যায় স্মৃতি নির্মাল।
বর্ষার বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে নদীর স্রোতে ভাটিয়ালি গান উজানের মাঝি প্রিয় সুজন।
নিশীথ রাতে কোকিলের ডাকে ঘুম ভেঙে গেলে প্রিয়াকে খুঁজি বিরহের গান।
তাল বাগান আম বাগান লিচু বাগান আতা বাগান জাম ফলে শোভা সৌরভ আনন্দ।
শ্যামল মাঠে ঘুড়ি উড়াই লুটোপুটি সন্ধায় বন্ধুর সাথে খেজুর রস খাওয়া আকাশে চাঁদ।
পালা গান যাত্রা গান বাউলের এক-তারায় সাহিত্য আসর কবিতা আবৃত্তি প্রেমের দিন।
রাতের গভীরে জোনাকি দূরে হাটখোলা ষ্টেশনে হুইসিল রেলগাড়ি ইতিহাস মিলন।
টার্মিনাল মোটরগাড়ি রিকশা ভ্যান বাইক গাঁয়ের বধূ গরুর গাড়িতে যাত্রা বৈচিত্র্য।
আউলা ঘর বাউবি বাতাস দূরে ডাঙার ব্রীজ জুংগি পাখিগুলো উড়ে যায় মধুর চিত্র।
ভালোবাসা বুকে পরাণ প্রিয়ারে খোঁজে ভোরের আলোতে দিওয়ানা প্রেমিক নয়ন।
কলেজ মাঠ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস রাজপথে মিছিল শ্লোগান অধিকার বিপ্লবী জীবন।
বায়ান্নোর ভাষা ঊনসত্তরে আসাদের সংগ্রাম একাত্তরে রক্তঝরা মুক্তিযুদ্ধ মুক্ত সূর্যোদয়।
নব্বইয়ে গণ আন্দোলন পুলিশের লাঠিচার্জ মামলা বন্দী জীবন জেলখানায়।
সময়ের প্রয়োজনে বৈষম্য মুক্ত আন্দোলনে আলোর বার্তা আসে ক্ষণকাল আভরণ।
দিনের সামনে কঠিন আঁধার রাজা আসে রাজা যায় নতুন রাজা স্বপ্ন দেখে সুষমবন্টন!
ফসলের মাঠে আগাছা উঁকি দেয় লোভ লালসার ক্রোধে পূর্বাভাষ অশনি!
রাজার স্বপ্ন ভেঙে খান খান জাতিকে ভেদাভেদ ঘিরে ধরে কঠিন আঁধার অগ্নি দহন।
ইতিহাসের পাণ্ডুলিপিতে প্রতিটি রাজার জীবন সংসারে বেদনাবিধুর যন্ত্রণা।
শুধু অর্থের অহংকারে যে নিজেকে ধনী মনে করে তার চেয়ে ভিক্ষেরী নেই জগতে করুন!
কতো হত্যা কতো ধ্বংস কতো গুম কতো খুন চলমান রাজনীতির উত্থান পতন বিবাদ।
কঠিন দুর্দিন নিষ্ঠুর সময় তবু কালো আঁধার ভেঙে নতুন সূর্য সকালের শস্য আবাদ।
ইচ্ছে করে জন্মভূমির মাটিতে বার বার ফিরে আসি ক্ষুধামুক্তির বিপ্লবী জীবন।
অনাগত প্রভাতের জন্য যুদ্ধ করি সুষমবন্টন অধিকার ভূমির বন্টন নিপুণ।
ইচ্ছে করে সভ্যতার সাথে মিলিত হই মানবতার সেবায় সমাজ জেগে উঠুক নন্দন!
প্রাণের টানে অতীন্দ্রিয় খোয়াবে সবার সাথে দেখা হবে পুনর্মিলন আলিঙ্গন পরিচয়!
ইচ্ছে করে সময়ের প্রয়োজনে প্রিয়তমার সাথে সংসার করি আগামী বংশধর সততায়।
হঠাৎ জীবন থেমকে দাড়ালে নিরব নিঃশব্দ যদি আর ফিরে না আসি বেদনা ব্যথায়!
তবে ভেবে নিও আমি ঘুমিয়ে পড়েছি তবু অতন্দ্র অনাগত বিপ্লবী নতুন আহবান বিজয়।
হাঁটতে হাঁটতে ভাগ্যক্রমে যৌবন একদিন ক্লান্ত বার্ধক্যে মিশে সনাতন থেকে আবার নতুন!
জগত তাঁর নিয়ম আইনে চলে চক্রকারে ঘুরে ফিরে মেঘে মেঘে সংর্ঘষ নদী সাগর বিজন!
মাঝে স্ত্রী সন্তান স্বজন প্রতিবেশী অন্তরঙ্গ বন্ধু হয়ে উঠে প্রেম ভালোবাসায় সর্বজন।
অনেক সূর্যের দিন অনেক চন্দ্রের রাত হৃদয়ে আলো ছড়ায় কখনো নিঃসঙ্গ আঁধারে জীবন!
স্মৃতি যেন সব সময় মনের গভীরে বেদনার ক্ষত সৃষ্টি করে বিচ্ছেদে সখির চোখ মলিন।
পৃথিবীর গুহা ভেদ করে কতো যুগ কতো শতাব্দী হারিয়ে গেছে পিপাসার অতৃপ্ত বাসনা।
পথের সাথে পথের হয় দেখা তারপরও কতো পথ অচেনা থেকে যায় জীবনের গভীরে মরণ!
সময় যেন বৃত্তের গভীরে মহাকালের দীর্ঘ ইতিহাস জন্মজন্মান্তরের নব নব শৈশব ভূবন!
ইতিহাস যারা ভুলে যায় দুঃখ তাদের কাছে ফিরে আসে বার বার দীর্ঘ প্রাণের বেদনা।
জীবন চলমান সিরিজ আধুনিক বিজ্ঞানের গবেষণায় রাজনীতি কৌশল সুফির সাধনা।
কর্মজীবন শেষের দিকে ছাত্র ছাত্রী শিক্ষক কর্মচারী নবীন বরণ বিদায় বিচ্ছেদ দহন।
অন্ধকে রাস্তা পারাপার সহজ কিন্তু বিবেক অন্ধকে পারাপার কঠিন জীর্ণশীর্ণ!
ধর্মের বিধান হেদায়েত সফর শায়খের সাথে তরিকা প্রচার সমুদ্রের বুকে শান্তির নৌকা!
তপস্যায় মহান স্রষ্টার সাথে ফানায় একাকার মহামিলন বিশ্ব-আত্মার সমগ্রে নির্বাক!
সাধনায় এক ফোঁটা পানি সাগরে মিশে বলে চৈতন্যে মহা-সাগর প্রেম দীপ্তকর!
মিলনের পূর্বেও ছিল এক ফোঁটা পানি তৃষ্ণার বিরহ ধ্যান সাধনায় বৃহৎ সে অনাদি চিরন্তন!
প্রতিটি নূরই যেন মহা-নূরের দিকে ধাবিত অনন্তকাল বিশ্বত্মার দিকে প্রবাহমান-
প্রতিটি আত্মাই যেন মহাত্মার দিকে ধাবিত অব্যয় অক্ষয় গতিশীল চলমান-
মক্কায় শরিয়া কাবা হৃদয়ের গভীরে আদেশ নূর নূর-মুহাম্মদ নূরের গভীরে মহানূর!
যেখানেই উদ্ভাসিত নূর সেখানেই মানবের জীবন্ত কাবা নূর মুহাম্মদ পবিত্র নূরে দীপ্তকর!
ধ্যানে পরমত্মার সাথে মহামিলনে সাধক উপলব্ধি করে শ্বাশত চিরন্তন প্রেক্ষাপট।
এটা মহা-চৈতন্যের মহা-সামদ্রিক অনুভূতি ও মহা-উপলব্ধির মহাপ্রেম তট।
পুরোটা জগত যেন জীবন্ত আদম সুরত মুহাম্মদ সাঃ অবয়ব দর্শন!
গোধূলির মৃত্যু হলে রাত্রির আগমনে সবাই ফিরে যাবো প্রিয় স্রষ্টা মহান!
অনির্বাণ শিখায় সালেক আলিঙ্গন মাশুক দর্শনে মহা-পুনর্মিলন!
প্রিয়তম স্বদেশ প্রকৃতি পুরনো স্মৃতি অনাগত ভবিষ্যৎ বংশধর জেনে রাখো জীবন.
আমি যদি আর কোন দিন ফিরে না আসি স্থিতির সত্য আসন!
তবে এটাই হয়তো তোমাদের সাথে আমার শেষ দেখা ভালোবাসার দীর্ঘ ইতিহাস।
তবে এটাই হয়তো তোমাদের সাথে আমার শেষ আলিঙ্গন পুনর্মিলন সত্য বিশ্বাস!
শেষ বয়সে আমি যদি আর কোন দিন ফিরে না আসি ক্লান্ত জীবন নিঃশেষ,
তবে বুঝে নিও আমি একেবার ঘুমিয়ে পড়েছি বিদায় জীবন মৃত্যুর সাথে পুনর্মিলন অবশেষ।

০৩/১২/২০২৪