এস.এম.রকি,খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: শস্যভান্ডার খ্যাত দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় গবাদিপশুর গো-খাদ্যের উপর অর্থনৈতিক চাপ কমাতে পরিত্যক্ত পতিত জমি ও সড়কের দুপাশে নেপিয়ার জাতের ঘাস চাষ করেছে খামারীরা। এতে কমে আসছে গো-খাদ্য হিসেবে ফিডের নির্ভরতা, কমেছে খামারিদের গরু লালন-পালনের খরচও। উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরামর্শে পরিত্যক্ত ও নিচু জমির পাশাপাশি বিভিন্ন সড়কের দুইধারে উন্নত জাতের ঘাস চাষ করছে উপজেলার ১৭১ জন খামারী।
উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিস ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে প্রায় ২৭ কিলোমিটার রাস্তার পাশে ও পরিত্যক্ত জমিতে ঘাস চাষ হয়েছে। ১৬২ জন ঘাসচাষী ও ৯ জন ঘাস বিক্রেতা এই ঘাষ রক্ষণাবেক্ষণের কাজে সম্পৃক্ত। সেই সাথে উপজেলায় বড় ও ছোট পরিসরে ঘাস খাওয়ার উপযোগী প্রায় ২ লক্ষ ১০ হাজার ৮১০ টি গবাদিপশু রয়েছে। এর মধ্যে গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ আছে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে সরেজমিনে উপজেলার পাকেরহাট থেকে খানসামা সড়ক, কাচিনীয়া থেকে খানসামা সড়ক ঘুরে দেখা যায়, দু’পাশে লাগানো হয়েছে নেপিয়ার জাতের ঘাস। এতে সড়কে সৌন্দর্যের পাশাপাশি লাভবান হচ্ছেন খামারিরা। পরিত্যক্ত জমিতে চাষ করা এসব ঘাস খুব বেশি যত্ন ছাড়াই বেড়ে উঠছে তাড়াতাড়ি। এই ঘাস বড় ও গোখাদ্যের উপযোগী হলে কর্তনের পর পুনরায় গজিয়ে উঠে।
উপজেলার সহজপুর এলাকার খামারী অলিউর রহমান বলেন, প্রাণীসম্পদ বিভাগের পরামর্শে পরিত্যক্ত জমি ও রাস্তার পার্শ্বে ঘাস লাগিয়েছি। নিজের গবাদিপশুর চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয়ভাবে বিক্রিও করি।
উপজেলার বালাপাড়া গ্রামের লিটন ইসলাম বলেন, বাজারে গোখাদ্যের দাম তূলনামূলক বেশী। এতে গরু-ছাগল লালন-পালন করতে হিমশিম খেতে হয়। তাই বাড়ির পার্শ্বে ঘাস চাষ করতেছি যেন নিজের গরু-ছাগলের চাহিদা মেটানো যায়।
স্থানীয় ঘাস বিক্রেতা আফজাল হোসেন বলেন, বর্তমান সময়ে গরু-ছাগলের খাদ্যের দাম বেশী হওয়ায় মানুষজন ঘাসের উপর আগ্রহী হয়ে উঠছে। প্রায় প্রতিদিনই বাজারে প্রতি আঁটি ঘাস ১০-২০ টাকা দরে বিক্রি করতেছি। এতে নিজেরও আয়ের সুযোগ তৈরী হয়েছে।
খানসামা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রতন কুমার ঘোষ বলেন, গবাদি-পশুর প্রাকৃতিক উপায়ে পুষ্টির যোগান বাড়াতে ঘাস গবাদিপশুর প্রধান খাদ্য। তাই গো-খাদ্যের অর্থনৈতিক চাপ কমানো ও গবাদি পশুর প্রাকৃতির পুষ্টি বাড়াতে সড়কে নেপিয়ার ও জারাসহ বিভিন্ন জাতের ঘাস লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছি। বর্তমান সময়ে গবাদিপশুর উৎপাদন খরচের অধিকাংশ খাদ্যের ব্যয় মিটাতে যায়। এতে খামারিদের লাভের পরিমাণ কমে যায় তাই ঘাস চাষে তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।