ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
ঈশ্বরদীতে পদ্মা নদীর চরাঞ্চলে বিষক্রিয়ায় পালের ১৬টি গরুর প্রাণহানি ঘটেছে। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে চররূপপুরে পদ্মার দুর্গম চরে বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। মালিকদের অভিযোগ, কলাবাগানে বিষ দিয়ে পরিকল্পিতভাবে গরু হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও প্রায় ২০টি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনের মতো গরুগুলো চরে ঘাস খাওয়ার জন্য নিয়ে যায় রাখালরা। বিকেলের দিকে ঘাস খাওয়ার এক পর্যায়ে গরুগুলো চরের একটি কলা বাগানের কিছু চারা গাছ খেয়ে ফেলে। এরপর সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে চরের মাঠেই মারা যায় পাঁচটি গরু। নদীর কিনারায় এসে মারা যায় আরও তিনটি গরু। বাড়িতে এসে মারা যায় আরও কয়েকটি গরু।
এগুলোর মধ্যে চররূপপুর গ্রামের মফেজ্জল বিশ্বাসের ৯টি, সাহাবুল বিশ্বাসের ৩টি, জয়নাল বিশ্বাসের ১টি, বিপুল প্রামানিকের ২টি, ইকবাল প্রামানিকের ১টিসহ মোট ১৬টি গরু মারা যায়।
স্থানীয় এজাজ বিশ্বাস অভিযোগ করেন, লক্ষীকুন্ডার কৈকুন্ডা গ্রামের আনিসের জমির কলাগাছ খেয়েই মূলত গরুগুলো মারা গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে দানাদার বিষ ওই কলাগাছে প্রয়োগ করা হয়েছিল। গরু কলা বাগানের ক্ষতি করে সেই রাগে বাগানের মালিক বিষ দিয়েছিলেন।
তিনি আরও জানান, ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার সকালে গিয়ে অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দিয়েছেন। আর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের জন্য গরুগুলোর রক্ত, লালা এবং মাংস ল্যাব টেস্টের জন্য নিয়ে গেছেন। খাদ্যের বিষক্রিয়ার কারণে এই গরুগুলোর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
গরুর মালিক মফেজ্জল বিশ্বাসের স্ত্রী রুম্পা বেগম বলেন, কৃষিকাজের পাশাপাশি গরু পালনই আমাদের একমাত্র আয়ের উৎস। গরু পালন করেই ছেলে-মেয়ের পড়াাশোনার পাশাপাশি পরিবারের সকল খরচ বহন করেন আমার স্বামী। এতগুলো গরুর একসাথে মারা যাওয়ায় আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।
জয়নাল বিশ্বাস নামের এক মালিক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বলেন, যদি কেউ অপরাধী হয়, তার শাস্তির দাবী করছি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেনারি সার্জন ডাঃ ফারুক হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে কলা গাছের পাতায় বিষ ছিল। বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এসব গরু মারা গেছে। মৃত গরুগুলো থেকে স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে। টেস্ট করার পরে প্রকৃত কারণ জানা যাবে। পালের অন্যান্য গরুগুলোকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও ঔষধ দেওয়া হয়েছে।
কলাবাগানের মালিক আনিসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। ##