নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পেটানোর সাত দিন পর সাইদুর রহমান বাবু (৪৫) নামের এক যুবলীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।সাইদুর রহমান সদর উপজেলার দরাপপুর গ্রামের মৃত মতিন মাস্টারের ছেলে। তিনি ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ছিলেন।
স্থানীয় ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন দলটির নেতা সাইদুর রহমান ও তাঁর ভাইদের বাড়িঘরে হামলা হয়। তখন থেকে তিনি ও তাঁর তিন ভাই আত্মগোপনে ছিলেন। গত ৩০ অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে এলাকার একটি বাড়ি থেকে সাইদুরকে আটক করে দরাপপুর বাজারে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে প্রকাশ্যেই তাঁকে রড ও লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই দিন বিকেলে তাঁকে নাটোর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত পৌনে আটটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
সাইদুরের ভাই ও স্থানীয় কৃষক লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম নান্নুর দাবি, তাঁর ছোট ভাইকে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে এখনো আÍগোপনে আছেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পেশায় মাছচাষি হলেও সাইদুর রহমান বিগত সরকারের আমলে বিএনপির অসংখ্য নেতা-কর্মীদের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছেন। অনেককেই গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে নির্যাতন করে অর্থ আদায়ের অভিযোগও আছে তাঁর বিরুদ্ধে। এসব কারণে সাইদুরের ওপর স্থানীয়দের ক্ষোভ তৈরি
হয়েছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা কর্মীরা বলেন, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি কাবির হোসেন কাঙ্গালের নেতৃত্বে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে সাইদুর রহমানকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমরাএই হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচারের দাবি করেন।
এবিষয়ে কথা বলতে জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি কাবির হোসেন কাঙ্গালের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুর রহমান বলেন, মারধরের বিষয়টি সেসময় আমাদের কেউ জানায়নি। আজ পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়েরের কথা। আমরাও তার অপেক্ষায় রয়েছি। অভিযোগ পেলে তদন্তস্বাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হবে। বিষয়টিকে আমরা গুরুত্ব সহকারেই দেখছি।#