নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোরের গুরুদাসপুরে যৌতুকের দাবীতে স্ত্রী মোছাঃ শিউলী বেগমকে হত্যার দায়ে স্বামী শাহজামালকে (৩৮) মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে তা ভিকটিমের বাবা-মাকে প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ আদেশ দেন। এসময় আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আর ঘটনার সময় আসামীর বয়স ছিল ২৫ বছর। দন্ডপ্রাপ্ত শাহজামাল উপজেলার দুর্গাপুর বাবলাতলা গ্রামের মোঃ তছলিম উদ্দিনের ছেলে। আর নিহত শিউলী বেগম একই গ্রামের মোঃ নজরুল ইসলামের মেয়ে।
নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (বিশেষ পিপি) অ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুল কাদের মিঞা এতথ্য নিশ্চিত করে জানান, ২০১০ সালে জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার দূর্গাপুর বাবলাতলা গ্রামের দরিদ্র মৎস্যজীবি মোঃ নজরুল ইসলামের মেয়ে মোছাঃ শিউলী বেগমকে প্রেম করে বিয়ে করেন একই গ্রামের প্রতিবেশি তছলিম উদ্দিনের ছেলে শাহজামাল। বিয়ের সময় স্বামীর দাবীকৃত যৌতুকের ১৫ হাজার টাকার মধ্যে ১০ হাজার টাকা প্রদানও করেন। বাকি ৫ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। এতে অপারগতা প্রকাশ করলে মারধরসহ শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে। এরইমধ্যে তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। ২০১১ সালের ১ জানুয়রী শাহজামাল যৌতুকের বকেয়া ৫ হাজার টাকার জন্য স্ত্রী শিউলি বেগমকেকে পিটিয়ে ও গলা টিপে হত্যা করে মরদেহ বাড়িতে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে জামাই শাহজামাল (২৫), শশুড় তছলিম উদ্দিন (৫২) ও শাশুড়ী সামনুর বেগম (৪৫) কে আসামী গুরুদাসপুর থানায় একটি মামালা দায়ের করেন। মামলাটি থানার তৎকালিন তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ রফিকুল ইসলাম তদন্ত শেষে শুধুমাত্র শাহজামালকে অভিযুক্ত করে একই বছরের ৩০ মে আদালতে চার্জসীন প্রদান করেন। পরবর্তীতে মামলাটি নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। ওই মামলার দীর্ঘ শুনানী ও প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বিচারক আজ এই রায় দেন।