নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরে হট্টগোল, হাতাহাতি, চেয়ার ও মঞ্চ ভাংচুর এর মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা। বুধবার দুপুর দুইটার দিকে নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দ্দৌলা সরকারি কলেজ মাঠে তৈরি মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। পরে বিকালে ওই মঞ্চেই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা থেকে আসা কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা সেখানে বক্তব্য রাখেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, অনেক রক্ত ত্যাগের বিনিময়ে আমরা যে নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি তা সবার জন্য কাজে লাগাতে হবে। দেশকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির দিকে এগিয়ে নিতে এখন আমাদেরকে ভুমিকা রাখতে হবে। দেশে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে আর কোন স্বৈরাচারী শক্তিকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেয়া হবে না। ছাত্ররা আর কোন বিশৃঙ্খলার সাথে জড়িত হবে না। এখন আমাদের দেশ গঠনের সময়। যে সকল শহীদ ও আহত পরিবার রয়েছেন তাদের পাশে সরকারের সাথে ছাত্রসমাজ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সুখ-দুঃখে পাশে দাঁড়াবে। অনুষ্ঠানে কিছু বিশৃঙ্খলা হওয়ায় দুঃখ প্রকাশও করেন নেতৃবৃন্দ।
এর আগে দুপুর একটার দিকে শহরের অনিমা চৌধুরী অডিটোরিয়ামে নাটোরের ছাত্র আন্দোলনের অংশগ্রহনকারীদের মত বিনিময় সভায় ছাত্রদের দুই পক্ষের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সেই সভা চলা অবস্থায় দুপুর দুইটার দিকে দুর্বৃত্তরা এনএস কলেজ মাঠের সমাবেশের মঞ্চ ভাংচুর করে। আয়োজকদের দাবি, অনিমা চৌধুরী অডিটোরিয়াম ছাত্রদের যে পক্ষ হট্টগোল বাধায় তারাই সেখান থেকে বের হয়ে এসে সমাবেশের মঞ্চ ভাঙচুর করে। সদর থানার উপপরিদর্শক মোস্তফা কামাল বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই দুর্বৃত্তরা চলে যায়। দুপুরে নিহত শহীদ পরিবারের সদস্য নাগরিক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের মতবিনিময়কালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। দুপুর একটার দিকে দিকে হাতাহাতির সময় কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মো. মাহিন সরকার, কুররাতুল আইন কানিজ, ইফতেখার আলম, ফয়সাল আহমেদ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, অনিমা চৌধুরী অডিটোরিয়ামে ছাত্র আন্দোলনে নাটোরে নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর আলোচনা শুরু হলে অন্য গ্রুপের শিক্ষার্থীরা সেখানে ঢুকে পড়ে। এ সময় চেয়ারে বসা নিয়ে দু’গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। ঢাকা থেকে আসা সমন্বয়করা এ সময় সবাইকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েও ব্যর্থ হন। পরে খবর পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও সেনাবাহিনী সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে শিক্ষার্থীদের অন্য একটি পক্ষের দাবি, যারা প্রকৃতপক্ষে নাটোরে আন্দোলন করেছে ও আহত হয়েছে তাদেরকে এড়িয়ে এই আয়োাজন করায় শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন, ফলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অনেকে ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে নাটোরে চাঁদাবাজি ও অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেস্টা করছে বলেও তারা দাবী করেন। আয়োজকদের দাবি বহিরাগতরা ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী, অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতেই তারা এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করেছে। অনুষ্ঠান শেষ হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে কথা বলে এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।