আল্লাহর কাছে তওবাকারীর মর্যাদা

আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে ভালো ও মন্দের সহজাত প্রবৃত্তি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তাদের ভালো ও মন্দের স্বাধীনতা দিয়েছেন। ফলে তারা চাইলে ভালো কাজ যেমন করতে পারে, চাইলে মন্দ কাজও করতে পারে। শুধু সুপ্রবৃত্তি দিয়েই যদি সৃষ্টি করতেন, তাহলে কে তাকওয়ার অধিকারী আর কে তাকওয়ার অধিকারী নয়—তা পার্থক্য করা যেত না। অথচ একেই আল্লাহ তাআলা জীবন ও মৃত্যু তথা মানুষ সৃষ্টির কারণ বলে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করেছেন।

ভালো ও মন্দের এই সহজাত প্রবৃত্তি দিয়েছেন মূলত আল্লাহ তাআলা মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য। এমন অবাধ স্বাধীনতা থাকা সত্ত্বেও কে গুনাহ ও অন্যায় থেকে বিরত থাকে, আর কে প্রবৃত্তির তাড়নায় প্রভাবিত হয়ে অসৎ কাজে লিপ্ত হয়—তা পরীক্ষা করার জন্য। তবে গুনাহ যে একেবারেই মানুষ করবে না, তাও কিন্তু বলা হয়নি। বরং মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি অপরাধ ও বিস্মৃতিপ্রবণ হওয়ার ফলে কোনো না কোনোভাবে তারা গুনাহে লিপ্ত হতে পারে, এটি স্বাভাবিক। কিন্তু গুনাহ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তাওবা না করাই বরং নিন্দনীয় ও অনুচিত। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক আদমসন্তানই সহজাত ভুলকারী। তবে তাদের মধ্যে যারা আল্লাহর কাছে তাওবা করে, তারাই সবার চেয়ে উত্তম।’ (তিরমজি: ২৪৯৯; আহমাদ: ১৩০৪৯)

একইভাবে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ক্ষমার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘কেউ যদি পাপ কিংবা নিজের ওপর জুলুম করার পর আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে, সে আল্লাহ তাআলাকে ক্ষমাশীল ও দয়ার্দ্র পাবে।’ (সুরা নিসা: ১১০)

তাই কখনো গুনাহ হয়ে গেলে পরপরই দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিষ্ঠাসহকারে তওবা করে নেওয়া উচিত। উচিত একান্তে আল্লাহর ক্ষমা ও অনুগ্রহ কামনা করে ওই পাপ আর না করার কঠোর ও দৃঢ়সঙ্কল্প গ্রহণ করা। যেন ভবিষ্যতে প্রবৃত্তির প্রবঞ্চনায় আর কোনো গুনাহ না হয়ে যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখা।